বাগেরহাটে ভেসে গেল ১৬ হাজার মাছের ঘের
৩০ জুলাই ২০২১বাগেরহাট মৎস্য বিভাগের বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) এ এস এম রাসেল ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত দুই দিনের অতি বৃষ্টি ও প্রবল জোয়ারের পানিতে রামপাল, মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নের মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে৷ এর মধ্যে রয়েছে সাড়ে সাত হাজার পুকুর, ৯ হাজার চিংড়ির ঘের৷
রামপাল উপজেলার বাঁশতলি গ্রামের মাছ চাষি মোস্তাফিজুর রহমান ৫০ বিঘা জমিতে ঘেরে মাছের চাষ করছিলেন৷ গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে মাছের ঘের তলিয়ে গেছে৷ এতে তার অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে৷
ওই এলাকার চাষি পাভেল হোসেন পাঁচ বিঘা জমির ঘেরে গলদা, বাগদা ও সাদা মাছ চাষ করছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বাগদা চিংড়ি বড় হয়ে উঠেছিল এবং বাজারে বিক্রিও শুরু করেছিলাম কিন্তু গত তিনদিনের টানা বর্ষণে ঘের ভেসে মাছ বের হয়ে গেছে৷ এই ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবো বুঝতে পারছি না৷ ''
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া এলাকার ঘের মালিক শেখ হুমায়ুন কবির বলেন, দেড়শ বিঘা জমিতে মাছ চাষ করেন, গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে মাছ ভেসে যায়৷ এবার টানা বৃষ্টিতে আবারো একই অবস্থা৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর দুর্যোগে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছি৷ দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না উপকূলের মানুষদের৷”
বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম জানান, বাগেরহাটে টানা বৃষ্টির পানিতে কয়েক হাজার মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় কয়েক কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে চাষিদের৷
তিনি বলেন, বারবার দুর্যোগে মাছ চাষিরা সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে৷ দেশের রপ্তানি আয়ের বড় ভূমিকা রাখে বাগেরহাট জেলা৷ অনেক চাষি ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঝণ নিয়ে মাছের চাষ করে থাকে৷” তাই এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানান বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি মহিতুল৷
বাগেরহাট মৎস্য বিভাগের বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) এ এস এম রাসেল বলেন, সব মিলিয়ে মাছের ঘের ভেসে প্রায় ১১ কোটি টাকার ক্ষতির হিসাব পেয়েছি৷ বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা এ মৎস্য কর্মকর্তার৷ বাগের হাটে মোট ৬৭ হাজার মাছের ঘের রয়েছে৷
গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের ৬ হাজারের বেশি মাছের ঘের ভেসে যায়৷ চাষিদের অন্তত ৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় সে সময়৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)