বার্ধক্য সরে যাবে দূর থেকে দূরে
২২ জানুয়ারি ২০১১রিচার্ড মিলার৷ তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ধক্য বিষয় নিয়ে অনেকদিন ধরে কাজ করছেন৷ তাঁর গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বললেন,‘‘বার্ধক্য নিয়ে আমরা গবেষণা করছি – আগে মানুষ একথা শুনলে তা নিয়ে হাসাহাসি করতো৷ আমাদের বলা হত আমরা অযথা সময় নষ্ট করছি৷ কারণ তখন সবাই ধরে নিয়েছিল বার্ধক্য এড়ানোর কোন উপায় নেই – বার্ধক্য অপ্রতিরোধ্য৷ তবে আমরা বেশ কিছু প্রাণীর জীবনে পরিবর্তন এনেছি৷ কৃমি, মাছি, ইঁদুর – এসব প্রাণী এখন অনেক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে৷ বিশেষ খাওয়া-দাওয়া, জেনেটিক্সের কিছু বিষয় এবং নতুন কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে৷ মানুষ বৃদ্ধ হবে, এটা বন্ধ করার কোন উপায় নেই – তা এখন আর সত্যি নয়৷''
রিচার্ড মিলার আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে পরীক্ষা চালানো হয়েছে কৃমি আর মাছির ওপর৷ দেখা গেছে, এই প্রাণীগুলো অন্তত তিনগুন বেশি আয়ু নিয়ে বেঁচে ছিল ল্যাবে, বিশেষ ধরণের খাওয়া-দাওয়া এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সাহায্যে৷ তবে ইঁদুরের বেলায় দেখা গেছে, বিশেষ একটি হরমোন নির্গমন বন্ধ থাকলে ইঁদুরও অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে৷ স্প্রিংফিল্ডের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দ্রেই বার্টকে বললেন,‘‘ ইঁদুরের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার বিষয়টি নির্ভর করছিল অনেকগুলো শর্তের ওপর৷ তা থেকেই আমরা বলতে পারি, অনেক কিছু প্রমাণ করা সম্ভব৷ ২০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ইঁদুরের আয়ু বাড়ানো সম্ভব হয়েছে৷''
মানুষের বেলায় তা হতে পারে প্রায় ১৫০ বছর পর্যন্ত এবং মানুষকে বেশ সুস্থভাবেই বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে৷ বেশ জোর দিয়েই কথাগুলো বলেন আন্দ্রেই বার্টকে৷ বার্টকের ভাষায়,‘‘যে হরমোন বার্ধক্যের দিকে শরীরকে এগিয়ে নিয়ে যায় তা এক ধরণের ইনসুলিনের মাধ্যমে কমানো সম্ভব৷ মানবদেহে ইনসুলিন প্রবেশ করলে তা অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং শরীর তখন কম ইনসুলিন উৎপাদন করে৷ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটি হল শরীর শর্করা ছাড়া থাকতে সক্ষম হয়৷ এর ফলে শুধু আয়ু বাড়ানোই সম্ভব হয় না, যে কোন মানুষকে সুস্থ রাখাও সম্ভব হয়৷ অর্থাৎ ইনসুলিন শুধু আয়ু বাড়াবে না, এর পাশাপাশি যে কোনো দেহকে বা শরীরকে সুস্থও রাখবে৷''
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন