বার্লিন সফরেও চাপের মুখে নেতানিয়াহু
১৭ মার্চ ২০২৩প্রায় দশ সপ্তাহ ধরে দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু শেষ পর্যন্ত বার্লিন সফরে এলেন, যদিও তাতেও কিছুটা কাটছাঁট করতে হলো৷ ইসরায়েলি বুদ্ধিজীবীদের খোলা চিঠি সত্ত্বেও তাঁর জার্মানি সফর বাতিল করা হয় নি৷ নেতানিয়াহুর সফরের বিরুদ্ধে বার্লিনে কয়েক'শো ইসরায়েলিদের জোরালো প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে৷ ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের কাছে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে ‘ক্রাইম মিনিস্টার’ নামকরণ করে প্রতিবাদ জানান৷
যাবতীয় সমালোচনা অগ্রাহ্য করে দেশের মতো বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়েও নেতানিয়াহু বিচার বিভাগের সংস্কারের বিতর্কিত পদক্ষেপের পক্ষে জোরালো সওয়াল করলেন৷ তার মতে, এর ফলে ইসরায়েলের গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল তো হবেই না, বরং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে৷ নেতানিয়াহুর দাবি, তিনি পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলির আদলে ইসরায়েলেও অবশেষে ক্ষমতাকেন্দ্রগুলির মধ্যে ভারসাম্য আনছেন৷ শলৎসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তার সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপবাদ এবং মিথ্যাচার’ ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারের সঙ্গে আলোচনার পর নেতানিয়াহু অবশ্য কিছুটা সুর নরম করে বলেন, তিনি দেশে যা ঘটছে তা মন দিয়ে লক্ষ্য করছেন৷ আলোচনার পর স্টাইনমায়ারের দপ্তর থেকে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি৷
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস প্রকাশ্যে ইসরায়েলের সরকারের এই বিতর্কিত পদক্ষেপ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন এবং নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার ডাক দেন৷ ‘ইসরায়েলের বন্ধু’ হিসেবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, যে সে দেশের প্রেসিডেন্ট আইস্যাক হ্যারৎসগের আপোশ প্রস্তাব সম্পর্কে এখনো শেষ কথা বলা হয়নি৷ উল্লেখ্য, ইসরায়েলে প্রায় গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে সে দেশের প্রেসিডেন্ট তাঁর আনুষ্ঠানিক ভূমিকা সত্ত্বেও বুধবার সেই প্রস্তাব পেশ করেন৷ নেতানিয়াহু অবশ্য অবিলম্বে সেই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন৷
বর্তমান ঘটনাবলি সত্ত্বেও ঐতিহাসিক কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে জার্মানির বিশেষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক পরিবর্তন হবে না বলে জার্মান চ্যান্সেলর আশ্বাস দিয়েছেন৷ তবে নেতানিয়াহুর উৎসাহ সত্ত্বেও শলৎস দুই দেশের মন্ত্রিসভার যৌথ বৈঠকের রীতি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি৷ এমনকি ভবিষ্যতে আবার কবে এমন বৈঠক বসবে, সে বিষয়েও কিছু বলেননি৷ ইসরায়েলের বর্তমান জোট সরকারের কিছু আলট্রা অরথোডক্স ও চরম দক্ষিণপন্থি মন্ত্রীর সঙ্গে প্রকাশ্যে আলোচনার বিষয়ে জার্মানিসহ পশ্চিমা বিশ্বে প্রবল অস্বস্তি কাজ করছে৷ শলৎস ও নেতানিয়াহু দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করেছেন৷ জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করে যাবে এবং সে দেশ থেকে ‘অ্যারো ৩’ নামের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)