বার্লিনালেতে ইরানের জয়জয়কার
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১সংস্কৃত সাহিত্যে নাটক দৃশ্যকাব্য৷ এখনো তাই, তবে পরিভাষায় চলচ্চিত্র৷ এই দৃশ্যকাব্য এতটাই শক্তিশালী, যে সমাজ রাষ্ট্র সংস্কৃতির মেলবন্ধনে জনগণেশ৷
আমাদের বহুমান্য কবি অমীয় চক্রবর্তী লিখেছেন:
‘মেলাবেন তিনি ঝোড়ো হাওয়া আর
পোড়ো বাড়িটার
ঐ ভাঙা দরজাটা৷
মেলাবেন৷'
কে, কীভাবে মেলাবেন, কখন মেলাবেন, ভবিষ্যতের বাঁক কোনদিকে, হলফ করে কেউ বলতে না পারলেও চেষ্টার খামতি নেই৷ প্রত্যেকে চায়, বিশ্বজুড়েই দাবি, সংগতি, সংহতি৷ সমাজে৷ রাষ্ট্রীক মননে৷ এই মননবোধের জোরালো মাধ্যম চলচ্চিত্র৷ এবং শান্তির সোপান নির্মাণেও সহায়ক৷ যেমন দেখা গেল সদ্যসমাপ্ত ৬১ বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, ইউরোপের কয়েকটি ছবির কাহিনীমালায়৷ তুরস্কের ছবি ‘আলমানিয়া - ভিলকমেন ডয়েচলান্ড (স্বাগতম জার্মানি)'৷ পরিচালক ইয়াসমিন সামদারেলি৷ ছবিতে তুরস্ক-জার্মানির সম্পর্কের নৈকট্যই মূল প্রতিপাদ্য৷ একই ঘটনার সম্মিলন জার্মানি, ইটালি, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্সের ছবিতেও৷ রাজনীতির ডামাডোল সত্ত্বেও জাতিধর্মনির্বিশেষে প্রেমমিলনই মুখ্য৷ অহো!! -- দর্শককুলের কেউ-কেউ বলেন, এরকম ছবি আজকের দিনে জরুরি৷
ভারতীয় ছবিতেও এই লক্ষণ৷ হিন্দু-মুসলিম প্রেম, সাংস্কৃতিক বোধ একাত্ম৷ যেমন ‘পতং' (ঘুড়ি) ছবিতে৷ পতং-এর পরিচালক প্রশান্ত ভার্গব৷ ‘বেঙ্গলি ডিটেক্টিভ' (পরিচালক, ফিল কক্স) – এ বাঙালি-বিহারি, বাংলা-হিন্দি জগাখিচুড়ি হয়েও মনমননে ভারতীয়৷ অন্যদিকে বিশ্ববিখ্যাত কোরিওগ্রাফার পিনা বাউশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চিত্রপরিচালক ভিম ভেন্ডার্স-এর ছবি ‘পিনা'য় বৈশ্বিক সংস্কৃতির দ্যোতনা৷
যে সব ছবি পুরস্কৃত, বলা অতিরিক্ত, তার আবেদন মানবিক৷ জাগতিক৷ তবে, এই নিয়ে তর্কবিতর্ক থাকেই৷ থাকলেও বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক আবেদনে গৌণ৷ সুস্থ মানববোধে মেলাবেন, তিনি মেলাবেন৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন