বার্লিনে মে দিবসকে ঘিরে নানাদেশের মানুষের সমাবেশ
৫ মে ২০১১সন-তারিখ যোগ করেন নি বাংলার কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়৷ তো, বলা মুশকিল, ৪০ দশকে কখন লিখেছিলেন এই দুই পংক্তি :
মে দিবস দিচ্ছে ডাক
স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক
ওই সময় যে দেশসমূহ স্বৈরতন্ত্রীর ভূমিকায় ছিল, এখন এই অভিধায় ভূষিত করা যাবে না হয়তো৷ সমাজতন্ত্র ধ্বংসের পর বিশ্ব আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত৷ এবং, একক মোড়লিপনায় পরিচালিত৷ এই মোড়লিপনা নস্যাৎ করতেই দেশসমাজের বিবেকবান মানুষ পথে নামে, মুখরিত করে রাজপথ৷ যেমন করেছিল ১ মে ১৮৮৯ সালে, শিকাগোর হে মার্কেটে৷ শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের বিবাদ, সংঘাত৷ অতঃপর শ্রমিক নিহত৷ সেই দিন থেকে দুনিয়াজুড়ে শ্রমিকদিবস৷
মধ্যযুগ থেকে শুরু করে ১৯ শতকের প্রথমার্ধেও ইউরোপে ১ মে ছিল বসন্তকালীন কৃষি উৎসব৷ মধ্যযুগের ইউরোপিয়ানরা গাছের সবুজ পাতায় সজ্জিত হয়ে পাড়া-মহল্লা পরিক্রমণ করতেন৷ কিশলয়ের মুকুট পরে মে কিং (রাজা), মে কুইন (রানী) সাজতেন৷ হৈ-হুল্লোড়ে কৃষি-উৎসবে মেতে উঠতেন৷ সেই সময় এই উৎসবাদি ছিল খুবই জনপ্রিয়৷জার্মান লোকগীতিও রচিত হয়েছে বিস্তর৷
দিনকালে আমূল পরিবর্তন৷১ মে এখন বিশ্ব শ্রমদিবস৷ ছুটির দিন৷ যেহেতু ছুটির দিন, বার্লিন মেতে ওঠে নানাদেশীয় হরেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে৷ সকাল থেকে গভীর রাত অবধি উৎসব৷পথেঘাটে৷ মানুষের সমাবেশ৷ নাচগান৷ বিশ্বসংস্কৃতির প্রবাহ৷পথঘাট হয়ে যায় বৈশ্বিক এথনিক কালচারের নাটভূমি৷ --- প্রায়-একই কথা পড়ি মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়ের অনুবাদে রুশ কবি ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কির ১ মে নিয়ে লেখা কবিতায় :
একাত্ম হয়েছি জাগ্রত বিশ্বে
একাত্ম হয়েছি স্বাধিকারে, আমাতে
একাত্ম হয়েছি বিপুল জনতায়
একাত্ম হয়েছি পথঘাটে, উৎসবে
আমার একাত্মতা শ্রমিকসংঘে
আমার একাত্মতা পয়লা মে-র আন্দোলনে৷৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক