1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাঠবিড়ালি-র সেতু

মেলানি সেভসেনকো / আরবি২৬ জুলাই ২০১৪

বার্লিনেই এটা সম্ভব৷ আর তা হলো কাঠবিড়ালি, শেয়াল কিংবা বুনো শুয়োরের দেখা পাওয়া৷ কিন্তু প্রায়ই এই প্রাণীগুলি রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে৷ একটি নতুন সেতু কাঠবিড়ালিদের মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1Cir1
Aktion Tier baut eine Eichhörnchenbrücke
ছবি: Ursula Bauer

ছোট প্রাণীদের রক্ষা করবে

বার্লিনে বহু সেতু রয়েছে, যেমন ওবারবাউমব্র্যুকে, ভাইডেনডামারব্র্যুকে, কাইজারব্যার্গ ও গুস্টাভ-হাইনেমান ব্র্যুকে৷ সম্প্রতি আরেকটি সেতু যুক্ত হলো এই তালিকায়৷ আর সেটা হলো কাঠবিড়ালিদের জন্য সেতু৷ রাস্তা পারাপারে কাঠবিড়াল ছাড়াও ম্যার্টেন-এর মতো ছোট ছোট প্রাণীকেও রক্ষা করবে এই সেতু৷

ট্রেপটো-ক্যোপেনিক এলাকায় ম্যুগেলসেডাম-এর ওপর এই সেতুটি স্থাপন করা হয়৷ এটি বার্লিনের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চলের একটি ব্যস্ত রাস্তা৷

Bildergalerie Tiere im Winter
পাখি, শজারু ও অবশ্যই কাঠবিড়ালিদের জন্য বিপজ্জনক হলো যানবাহনছবি: picture-alliance/dpa

এটি হলো দ্বিতীয় কাঠবিড়ালি-সেতু জার্মানিতে৷ প্রথমটি স্থাপিত হয়েছে নর্থরাইন ওয়েস্টফালিয়ার ভ্লটো-তে৷ নয় মিটার উঁচু দুই প্রান্তের দুটি গাছে ২১ মিটার লম্বা মোটা দড়ি বেঁধে তৈরি করা হয়েছে এই সেতু৷

‘অ্যাকশন অ্যানিমেল'-এর উরসুলা বাউয়ার এই সেতু প্রকল্পে অংশ নিয়েছেন৷ ‘‘বন্যপ্রাণীরা যে আমাদের সঙ্গে বসবাস করে, এটা আমাদের মেনে নিতে হবে৷ পাখি, শজারু ও অবশ্যই কাঠবিড়ালিদের জন্য বিপজ্জনক হলো যানবাহন৷''

তবে জার্মানির মতো নিয়মমানা একটি দেশে এই ধরনের সেতু নির্মাণ করা সহজ ছিলনা, বলেন বাউয়ার৷ প্রথমে যে জায়গায় গাছগুলি দাঁড়িয়ে আছে, তার মালিকের খোঁজ করতে হয়৷ তারপর সেতু বাঁধার জন্য কয়েকমাস ধরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক বৃক্ষারোহী খুঁজতে হয়৷ এরপর সন্ধান করতে হয় ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করার জন্য উপযোগী এক বিমাসংস্থা৷

Aktion Tier baut eine Eichhörnchenbrücke
এখন পর্যন্ত ছোট্ট সেতুটির ব্যাপারে কোনো বাধা আসেনিছবি: Ursula Bauer

বাদামের লোভ

এই ধরনের সেতু শুধু দড়ি দিয়েই তৈরি হয় না৷ প্রাণীগুলিকে লোভ দেখানোর জন্য সেতুর দুই প্রান্তে ছোট বাক্সে বাদাম রেখে দেওয়া হয়৷ ‘‘এই প্রাণীগুলি নিজের ইচ্ছায় চলে৷ যেখানে যেতে চায় সেখানে পৌঁছাতে না পারলে সেতুটি ব্যবহার করবে না তারা৷'' বলেন বাউয়ার৷

এই ধরনের উদ্যোগ অন্যান্য দেশেও লক্ষ্য করা যায়৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের লংভিউতে বিশ্বের প্রথম কাঠবিড়ালি-সেতু নির্মাণ করা হয়৷ ১৮ মিটার দীর্ঘ ঝোলানো সেতুটি তৈরি করা হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও দমকলবাহিনীর পুরানো পাইপ দিয়ে৷

এতে খরচ পড়েছে ৭২০ ইউরোর মতো৷ এটির অনুকরণে যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ও নেদারল্যান্ডস-এও তৈরি করা হয় প্রাণীদের জন্য সেতু৷

কাঠবিড়ালি ছাড়াও অন্যান্য বন্যপ্রাণীও বার্লিনে চলাচল করে৷ এদের দেখা পেতে খুব বেশি দূরে যেতে হয় না৷ রাত তিনটার পর কোনো পানশালা থেকে বের হলে রাস্তার মৃদু আলোয় চকিতে দৌড়ে যাওয়া কোনো শিয়ালের দেখা মিলতে পারে৷ এমনকি বুনো শুয়োরও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে জনবসতিতে৷ এ কারণে বার্লিনকে জার্মানির ‘বন্যশূকরের রাজধানী' বলা হয়৷

নির্বিকার পদচারণা

অন্যান্য শহরের সঙ্গে বার্লিনের পার্থক্য হলো সেসব জায়গায় বন্যপ্রাণীরা শহরের আশেপাশে থাকে৷ বার্লিনে শহরের মধ্যেই বিচরণ করে তারা৷ বলেন বার্লিনের শিল্পী সুসানা হ্যারট্রিশ৷ তাঁর ‘বার্লিন ওয়াইল্ড লাইফ' ইন্সটলেশনে মানুষ ও বন্য জীবজন্তুর সহাবস্থান তুলে ধরা হয়েছে৷

বার্লিনে প্রাণীগুলির বিচরণ করতে কোনো অসুবিধা হয় না৷ এই শহরে অসংখ্য পার্ক থাকায় এক সবুজ চত্বর থেকে আর এক সবুজে যেতে পারে তারা অনায়াসে৷

ঐতিহাসিক কারণেই অন্যান্য শহরের তুলনায় বার্লিনের কেন্দ্রেই নানা পরিত্যক্ত জায়গা রয়েছে৷ শেয়াল ও বন্য খরগোশের মতো প্রাণীদের জন্য খুব উপযোগী এই সব জায়গা৷

সাবেক পূর্ব জার্মানির সময়কার বার্লিন প্রাচীর বরাবর তথাকথিত ‘ডেথজোন' বা ‘নো ম্যানস ল্যান্ড' আজ বন্য খরগোশদের এক প্রিয় আস্তানা৷ সেখানে দ্রুত বংশবৃদ্ধি হচ্ছে তাদের৷

৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে সবচেয়ে ভাল সময় গিয়েছে তাদের৷ বার্লিন প্রাচীর ও সীমান্তের স্থাপনা ভেঙে ফেলায় অনেকখানি অব্যবহৃত জায়গা পেয়ে যায় তারা৷ এই ধরনের জায়গা এখনও আছে, তবে পরিমাণ কমে যাচ্ছে৷

দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে

কাঠবিড়াল-সেতু নির্মাণ করার পর ‘অ্যাকশন অ্যানিমাল'-এর উরসুলা বাউয়ার এই ধরনের কোনো প্রাণীকে সেতু পার হতে দেখেননি৷ তার মানে এই নয় যে, তারা তা ব্যবহার করেনা৷ লক্ষ্য করা গিয়েছে, গাড়িচাপা পড়া কাঠবিড়ালির সংখ্যা কমে আসছে৷ তা সত্ত্বেও সেতুটি কাজ লাগছে কিনা তা দেখার জন্য সংস্থাটি একটি ক্যামেরা বসানোর চিন্তা করছে সেখানে৷

এখন পর্যন্ত ছোট্ট সেতুটির ব্যাপারে কোনো বাধা আসেনি৷ বরং উলটোটাই দেখা গিয়েছে৷ উদ্বোধনের সময় স্থানীয় রাজনীতিবিদরা এসেছেন সেখানে৷ স্থাপনাটির সঙ্গে ছবিও তুলেছেন৷ এখন তো এই ধরনের আরো সেতু বানানো যায় কিনা, তা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য