নেইমারের প্রথম
৮ আগস্ট ২০১৩ব্যাংককের রাজামাঙ্গালা স্টেডিয়ামে প্রায় ৫০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ইউরোপীয় ফুটবলের আসন্ন সমরশক্তির আরেকটা পরিচয় পাওয়া গেল৷ বাঘ-সিঙ্গিতে একসঙ্গে শিকার করতে নামলে যেমনটা ঘটতে পারে আরকি! ইউরোপ কেন, সারা বিশ্বের ফুটবলমোদীরা উদগ্রীব হয়ে বসে আছেন, মেসি আর নেইমার, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে বিশ্বের সেরা প্রতিভাকে যোগ দিলে বার্সার অফেন্সটা কেমন হয়, তা জানবার জন্য৷
গতকাল বার্সার বাকি গোলগুলো কোত্থেকে এসেছে বা কে করেছে, তা নিয়ে পত্রপত্রিকাতেও যা হোক একটা ফিরিস্তি দিয়েই সেরে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু নেইমার কি মেসির সঙ্গে, মেসি কি নেইমারের সঙ্গে কমবাইন করতে প্রস্তুত, কমবাইন করতে সক্ষম? এ প্রশ্নের জবাবে বার্সার নতুন কোচ জেরার্দো মার্তিনো বলেছেন, ‘‘ওরা ভিন্ন ধরনের খেলোয়াড় হলেও, ওরা আজ ভালোই বোঝাপড়া দেখিয়েছে বলে আমার ধারণা৷ ওরা পরস্পরকে ভালোই খুঁজে নিয়েছে৷''
কিশোর মেসি বার্সেলোনায় এসেছিল বাবা-মাকে সাথে নিয়ে তার শরীরের বাড় হচ্ছে না কেন, সেই অসুখ সারাতে, বার্সার অর্থানুকুল্যে৷ বার্সেলোনা এবার নেইমারকে এনেছে নগদ ৫৭ মিলিয়ন ইউরো খরচা করে৷ ওদিকে এ সপ্তাহেই খবর বেরিয়েছে, নেইমার নাকি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন৷ অবশ্য থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলায় সেই অ্যানিমিয়ার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি৷ আর অ্যানিমিয়া রোগটাও আপাতদৃষ্টিতে তেমন ভীতিজনক কিছু নয় – যদি না সেটা বিশ্বের আগামী সেরা খেলোয়াড়ের হয়ে থাকে, বিশেষজ্ঞরা যেমন ধরে বসে আছেন৷
নতুনকে আনো, পুরনোকে ফেলো না
বার্সার খেলায় ফরোয়ার্ডরা হচ্ছে আধুনিক দাড়ি কামানোর সরঞ্জামে প্ল্যাটিনাম দেওয়া ব্লেডের মতো৷ তাদের কাজ হলো প্রতিপক্ষের নিখুঁত করে মস্তকমুণ্ডন৷ কিন্তু বার্সার খেলার প্রাণভোমরা হলো চেস্ক ফাব্রেগাস কিংবা সাভির মতো মিডফিল্ডারদের অসাধারণ পাসিং৷ এবং সেটা জেনেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফাব্রেগাসকে টানতে আকুল৷
ব্যাংককেও ফাব্রেগাস বার্সার সেরা আক্রমণগুলোর পিছনে ছিলেন, ছিল তাঁর তিন খেলোয়াড়ের মিডফিল্ডের বাঁ দিক থেকে নিখুঁত পাস৷ সাধে কি মার্তিনো বলেছেন, ফাব্রেগাসকে যেতে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না৷ খেলার পরের দিকে যখন সাভি, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা আর সার্জিও বুস্কেটসের ত্রয়ী পুরনো বার্সার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, তখন ঐ ফাব্রেগাসকেই আবার দেখা যায় ফরোয়ার্ড হিসেবে মেসি-নেইমারের মাঠ ছাড়ার পর তাঁদের একজনের জায়গা নিতে৷
এ ভাবেই বার্সোলোনার খেলা: দাবার বোড়ের মতো ঘর খালি হচ্ছে, ঘর ভর্তি হচ্ছে, অভিযান চলেছে৷ লা মাসিয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমিতে তো ঠিক তা-ই শেখানো হয়৷
এসি/ডিজি (এএফপি)