ইউরো ২০১২
২২ মে ২০১২বায়ার্ন মিউনিখের প্রেসিডেন্ট কার্ল-হাইনৎস রুমেনিগে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বায়ার্নের হারের পর-পরই বলেছিলেন, তিন-তিনটে ম্যাচ-বল মিস করলে টেনিসেও জেতা যায় না৷ এককালের খ্যাতিসম্পন্ন ফরোয়ার্ড রুমেনিগে ভালো করেই জানেন, গোল না করতে পারলে ভালো খেলে কোনো লাভ নেই৷ জার্মান জাতীয় দলের ম্যানেজার যা'কে বলেছেন ‘দক্ষতা'৷
আলিয়ানৎস আরেনায় হার যে খেলোয়াড়টিকে সবচেয়ে বিধ্বস্ত করেছে - এবং টেলিভিশনেও সেটা স্পষ্ট দেখা গেছে - তিনি হলেন মাঝমাঠের সংগঠক বাস্টিয়ান শোয়াইনস্টাইগার, আগে হলে যাকে আমরা স্টপার বলতাম৷ শোয়াইনস্টাইগার যে দায়িত্ব ও চাপের মুখে পেনাল্টি মিস করবেন, এটা গোটা জাতির কেউ ভাবতে পারেনি৷ বায়ার্ন কোচ ইয়ুপ হাইনকেস স্বয়ং বলেছেন, জাতীয় একাদশের একজন প্রতিষ্ঠিত প্লেয়ার যখন ও'ভাবে পেনাল্টি মিস করে, তখন সেটা ভুলতে সময় লাগে৷ ওদিকে পেনাল্টি মিসের পরেও জার্মান জাতীয় একাদশে শোয়াইস্টাইগার'কে ঠিক একই ভাবে প্রয়োজন৷
বায়ার্নের জনা আটেক প্লেয়ারের ডাক পড়েছে জাতীয় দলের প্রাথমিক বাছাই'য়ে৷ তাদের মধ্যে বায়ার্ন ক্যাপ্টেন ফিলিপ লাম, বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার এবং ফরোয়ার্ডে টোমাস ম্যুলার কিংবা মারিও গোমেজ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, তা'তে তাঁদের বিশেষ মুষড়ে পড়ার কোনো কারণ নেই৷ অপরদিকে জার্মান ফুটবলের ‘সম্রাট' ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ার কিন্তু খেলার আগেই বলেছিলেন, বায়ার্নের হার ইউরো ২০১২'র জন্য জার্মানির প্রস্তুতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে৷
এবার দলের ম্যানেজার অলিভার বিয়ারহফ'ও বলেছেন, বায়ার্নের হার ছিল ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য এক ধরণের সতর্কবার্তা৷ ঐ হার প্রমাণ করে দিয়েছে যে, ফুটবলে যে সেরা দলই সব সময় জেতে, এমন নয়৷ মনে করা যেতে পারে, বায়ার্নের হারের অব্যবহিত পরে জাতীয় কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ'এর খেদোক্তি: ‘‘ফুটবল কখনো-সখনো বড়ই নির্মম হয়৷'' কিন্তু বিয়ারহফ এবং ল্যোভ, উভয়েই নিশ্চিত যে, এর ফলে প্লেয়ারদের আস্থায় চিড় ধরেনি এবং ধরবে না৷ অপরদিকে বায়ার্ন প্লেয়ারদের এবার ফ্রান্সের প্রশিক্ষণ শিবিরে আসার জন্য আগামী শুক্রবারের পরেও কয়েকদিন সময় দেওয়া হচ্ছে, বলে প্রকাশ৷ বাসেল'এর ফ্রেন্ডলিতেও বায়ার্নের প্লেয়াররা সম্ভবত থাকবে না৷
মনস্তত্ত্বের সঙ্গে পেশাদারি ফুটবল ও ফুটবলারদের বেশি জড়িয়ে ফেলাতে লাভ নেই, সেটা খেলোয়াড় এবং কর্মকর্তা, সকলেই জানেন৷ বাস্তব পরিস্থিতি হল, দলের সকলেই তো আর কিছু বায়ার্নের প্লেয়ার নয়৷ সদ্য বুন্ডেসলিগা এবং জার্মান কাপ জেতা ডর্টমুন্ডের ওরাও তুরেৎ'এ আছে৷ রবিবার মাদ্রিদ থেকে এসে পৌঁছেছেন মেসুত ও্যজিল ও সামি খেদিরা, বায়ার্নের পরাজয় যাদের আত্মবিশ্বাসে আঁচড় পর্যন্ত বসাতে পারবে না৷ ও্যজিল তো তাঁর আগমনের পরেই বলেছেন, ‘‘আমরা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নের খেতাবটা চাই৷ এবং সেটা আমরা আনতে পারব বলেই আমার ধারণা৷''
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (ডিপিএ, এঅএফপি)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন