বিএনপিকে দেখে ১৪ দলের আসন ভাগাভাগি
২০ জুলাই ২০২৩এর বাইরে আওয়ামী লীগ বৃহত্তর নির্বাচনী জোটও করতে পারে। সেখানে আরো অনেক দল থাকতে পারে। তাতে ১৪ দলের শরিকদের কোনো আপত্তি নেই।
দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গণভবনে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বুধবার রাতে। সেখানে অতীতের মান অভিমান ভুলে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর নির্বাচনের আগে দলগত এবং জোটগত কর্মসূচি নিয়ে তারা মাঠে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের জানিয়েছেন যথাসময়ে নির্বাচন হবে। নির্বাচন বানচাল বা প্রতিহতের চেষ্টা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে।
নির্বাচনে তারা আসন ভাগাভাগি করবেন। ১৪ দলের শরিক প্রত্যেক দলকে কমপেক্ষ একটি করে আসনে জোটের মনোনয়ন দেয়া হবে। তারপর দলের শক্তি ও অবস্থান বিবেবচনা করে বাকি আসন ভাগাভাগি হবে। সেপ্টেম্বর মাসেই আসন বন্টন চূড়ান্ত করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন,"আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সরকারের অধীনেই সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে যথাসময়ে আসন ভাগাভাগি হবে। আমরা দলীয়ভাবে এবং জোটগতভাবে নির্বাচনের আগে নানা কর্মসূচি পালন করব।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও আমরা জয়ী হলে সরকার গঠন জোটগতভাবে হবে কী না সেটা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। ১৪ দলের পরিসর আর বাড়বে না। তবে ১৪ দলের বাইরে আওয়ামী লীগ আরো বড় নির্বাচনী জোট করতে পারে। যেমন আগে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে মহাজোট করেছে। এবারও জাতীয় পার্টি বা অন্যদল নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো জোট করলে আমাদের আপত্তি নেই।”
তিনি জানান, "বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল নিয়ে কথা হয়েছে। তারা যে জামায়াতে ইসলামী এবং এবি পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে এটাকে আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে করি। কারণ তাদের নিবন্ধন নেই।”
"আর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতাকে বৈঠকে নব্য উপনিবেশবাদ বলে অভিহিত করেছি। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার আমরা প্রশংসা করেছি আমরা,” বলেন দিলীপ বড়ুয়া।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এমপি বলেন, "১৪ দলের সিট ভাগাভাগি নির্ভর করছে বিএনপি নির্বাচনে আসে কী না তার ওপর। সেটা দেখে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সিট ভাগাভাগি করা হবে। ওবায়দুল কাদের সাহেবের নেতৃত্বে আমরা বসে সেটা ঠিক করব। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে দেব। তিনি দেখে চূড়ান্ত করে দেবেন।”
"নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে হবে। আর জামায়ত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, ঐক্যবদ্ধ আছি” বলেন তরিকত ফেডারেশনের প্রধান।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু জানান,"মোটা দাগে মোট তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ১. ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করা। ২. নির্বাচন যথাসময়ে সংবিধান মেনেই হবে এবং ৩. সংবিধান এবং নির্বাচন বানচালের বিএনপি জামায়াতের তৎপরতা শক্ত হাতে দমন করা হবে।”
তিনি বলেন," ১৪ দল নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি করবে। তবে সেটা কীভাবে হবে তার নীতি নিয়ে আলোচনা হয়নি। সেটা নিয়ে আলাদাভাবে কাজ হবে। নির্বাচনকালীন সরকার এবং নির্বাচনে জয়ী হলে সেই সরকার কেমন হবে, দুই সরকারেই ১৪ দলের শরিকেরা থাকবেন কী না তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।”
১৪ দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে অতীতের মান অভিমান দূর হয়েছে জানিয়ে নেতারা বলেন, "সামনে আরো বৈঠক হবে, সেখানো আরো অনেক বিষয় পরিষ্কার হবে। আমরা অতীতে কী পেয়েছি , কী পাইনি সেটা এখন আর বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা এখন ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চাই।”
মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, "১৪ দল একসঙ্গে নির্বাচন করবে। নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি হবে এটাই সিদ্ধান্ত। সরকার গঠন কী রকম হবে তা আমরা নির্বাচনে আগে জয়ী হই তারপর দেখা যাবে।”