1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাচাচা ট্রাইব্যুনাল

১৭ জুন ২০১২

বিগত ১৯৯৪ সালে আফ্রিকার রুয়ান্ডাতে যে গণহত্যা হয়েছিলো তার বিচারে গঠিত গাচাচা ট্রাইব্যুনালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে সোমবার৷ তবে মানবাধিকার কর্মীদের কাছে এই ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম স্বচ্ছ নয়৷

https://p.dw.com/p/15Go6
Traditionelles Gacaca-Gericht zur Aufarbeitung der Genozid-Verbrechen in Ruanda http://www.flickr.com/photos/elisafinocchiaro/6461913033/sizes/o/in/photostream/
Ruanda Gacaca Gerichtছবি: CC--NC-BY-elisa finocchiaro

রেকর্ড

দশ বছর আগে গঠিত এই ট্রাইব্যুনাল দেড় মিলিয়নের বেশি ঘটনার বিচার করেছে৷ গাচাচা ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় এর লক্ষ্য ছিলো ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা৷ রুয়ান্ডার হুটু ও টুটসিদের মধ্যে সংঘটিত সেই গণহত্যায় মাত্র ১০০ দিনেই আট লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলো৷ সেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করার জন্য গাচাচা ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়৷ রুয়ান্ডার আইন মন্ত্রী থারসিসে কারুগারামা মনে করেন, অল্প সময়ে এত বেশি বিচারকাজ সম্পন্ন করাটা অনেক বড় অর্জন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার সন্দেহ পৃথিবীতে আর কোন আদালত আছে কিনা যারা মাত্র দশ বছরেই ১৯ লাখ মামলা শেষ করে৷ এর মধ্যে আদালত শতকরা ৩০ ভাগ লোককে খালাস দিয়েছে, মাত্র দশ ভাগের কম অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে৷ বাকি শাস্তিগুলোও ৫ থেকে ২৫ বছর কারাদণ্ডের মধ্যে৷''

Traditionelles Gacaca-Gericht zur Aufarbeitung der Genozid-Verbrechen in Ruanda
এইরকম জায়গাতে অনেক বিচারকাজ হয়েছেছবি: CC--NC-BY-mrflip

সমালোচনা

সরকারের পক্ষ থেকে প্রশংসা আসলেও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গাচাচা ট্রাইব্যুনালের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷ তাদের মতে, আন্তর্জাতিক রীতি নীতির তোয়াক্কা না করেই এই ট্রাইব্যুনাল এতদিন ধরে কাজ করে এসেছে৷ কারণ এই ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের নিজেদের ভেতর থেকেই নির্বাচিত করা হয়েছে, এমনকি অনেকের এই ধরনের মামলা পরিচালনার প্রশিক্ষণ পর্যন্ত নেই৷ বিগত ২০১১ সালের প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, বিচারকদের প্রয়োজনীয় পেশাগত দক্ষতা না থাকায় এই ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক মানসম্মত নয়৷ সংস্থার আফ্রিকা বিভাগের সিনিয়র গবেষক কারিনা টের্টসাকিয়ান বললেন, ‘‘আমার মতে, উদ্দেশ্য যতই ভালো হোক না কেন এই ধরনের মামলা আইনি প্রশিক্ষণ ছাড়া পরিচালনা করাটা বাস্তব সম্মত নয়৷ গাচাচা ট্রাইব্যুনালের আরেকটি সমস্যা হলো, বিবাদীদের জন্য কোন আইনি সহায়তা দেওয়া হয়নি৷ এই কারণে আমাদের কাছে এই ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে৷''

এই ট্রাইব্যুনালে যাদের বিচার করা হয়েছে তাদের নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার৷ সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণহত্যা চলাকালে আরপিএফ দলের অনুগত সেনাদের এই বিচারকাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে৷ উল্লেখ্য, রুয়ান্ডায় বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল হলো এই আরপিএফ৷

A man in Nyamata, 18 miles south of Kigali looks at hundreds of skulls, Jan. 26, 2002, at a memorial for victims of the 1994 genocide in Rwanda. More than 500,000 Tutsis and politically moderate Hutus were killed in the genocide and memorials have been built all over the central African nation to help the country's reconciliation process. (AP Photo/Saurabh Das
গণহত্যার শিকার হতভাগ্য মানুষগুলোর খুলিছবি: AP

স্থিতিশীলতার কারণ

তবে দেশটিতে বর্তমানে স্থিতিশীলতার কারণ হিসেবে এই ট্রাইব্যুনালকে দেখেন অনেকে৷ এই বিচারের কারণে দেশটিতে এখন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করছে, যেমনটি বললেন রুয়ান্ডা ন্যাশনাল ইউনিটি অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের চেয়ারম্যান বিশপ জিন রুকিয়াহানা৷ তিনি বলেন, ‘‘ সেই সময় সারা দেশে সবার চোখের সামনেই গণহত্যা চলেছে এবং সবাই তা দেখেছে৷ তাই তাদেরকে সেইসব ঘটনা নিয়ে কথা বলার এবং সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় তাদের কষ্টের মাত্রা কমেছে৷ তাদের মুখোমুখি হওয়াটা ছিলো অনেক অপরাধীর কাছে প্রায়শ্চিত্তের মত, অনেকে আবার অপরাধীদের ক্ষমাও করে দিয়েছে৷''

তবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, এই ট্রাইব্যুনালকে প্রতিশোধের জন্যও অনেক সময় ব্যবহার করা হয়েছে৷ যার উদাহরণ, গত কয়েক বছরে হাজার হাজার মানুষ রুয়ান্ডার পাশের দেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে৷

প্রতিবেদন: ড্যানিয়েল গাকুবা/আরআই

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য