বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডই অবৈধ
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫২০০২ সালের ১৬ই অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ই জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনী, তৎকালীন বিডিআর, পুলিশ, আনসার ও বেসরকারি প্রশাসনের সহায়তায় যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়৷ তৎকালীন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, সন্ত্রাস দমন ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য এই অভিযানের নির্দেশ দেয়৷ পরে ২০০৩ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি যৌথ অভিযানের দায়মুক্তি দিয়ে সংসদে আইন পাশ করে সরকার৷ এরপর গত রবিবার হাইকোর্ট ওই দায়মুক্তিকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে৷ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ডয়চে ভেলের মুখোমুখি হন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল৷
ডিডাব্লিউ: এর আগেও কি কখনও এই ধরনের দায়মুক্তিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে?
সুলতানা কামাল: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরও একই ঘটনা ঘটেছিল৷ সেক্ষেত্রে হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিল৷ পরে সেই দায়মুক্তিকে অবৈধ ঘোষণা করে আদালত৷ এরপর অবশ্য বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়৷ আর এক্ষেত্রেও ঐ একই ঘটনা ঘটেছে৷ এটা খুবই স্বাভাবিক যে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে আর দায়মুক্তি দেয়া যায় না৷ সেটা তো আইন বর্হিভূত, পাশাপাশি অসাংবিধানিকও বটে৷ উচ্চ আদালত সেই কাজটা করেছে৷ যার অর্থ, এখন ওই সময়কার ক্ষতিগ্রস্ত কেউ চাইলে বিচার চাইতে বা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করতে পারেন৷
এখনো তো দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে?
শুধু অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় নয়, যে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডই অবৈধ৷ এখনো যেসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে সেগুলোও অবৈধ৷ আমরা হাজার বার বলছি যে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটা উচিত নয়৷ এটা ঘটতে দেয়াও উচিত নয়৷ একটি গণতান্ত্রিক দেশে এভাবে চলতে পারে না৷ এর একটা শেষ হওয়া উচিত৷ আমরা এর অব্যহত প্রতিবাদ করছি৷ আমার মতে, সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে৷ এখানে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগও নেই৷