বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত কয়েকজন বাংলাদেশি ক্রিকেটার
নারীঘটিত কেলেঙ্কারি, শিশু গৃহকর্মী, দর্শক, এমনকি সতীর্থ খেলোয়াড়কে মারধরের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন বাংলাদেশের কিছু ক্রিকেটার৷ ছবিঘরে থাকছে সেইসব কথা৷
রুবেল হোসেন
২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর নাজনীন আক্তার হ্যাপি নামে এক নারী প্রতারণার অভিযোগে রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন৷ এই ঘটনায় ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি জেলে যেতে হয়েছিল রুবেলকে৷ এরপর বিসিবির সহায়তায় জামিন পেয়ে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলেন তিনি৷
আল আমিন হোসেন
২০১৫ সালে বিশ্বকাপ চলাকালীন শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল তাকে৷ পরের বছর বিপিএলের সময় হোটেলে নারী অতিথি নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তাকে জরিমানা করা হয়েছিল৷ নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ এনে গতবছর আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার স্ত্রী ইসরাত জাহান৷ মামলাটি এখনও চলছে৷
শাহাদাত হোসেন
২০১৯ সালে জাতীয় লিগের ম্যাচ চলার সময় সতীর্থ খেলোয়াড় আরাফাত সানি জুনিয়রকে মারধর করায় পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন তিনি৷ তবে নিষেধাজ্ঞার দেড় বছর পর ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে ক্রিকেটে ফিরতে বিসিবির কাছে আবেদন করেন শাহাদাত৷ পরে তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়৷ এর আগে ২০১৫ সালে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল৷ ওই মামলায় প্রায় দুই মাস জেলে থাকতে হয়ে তাকে৷
আরাফাত সানি
একজন স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় নাসরিন সুলতানা নামে আরেকজনকে বিয়ে করেছিলেন সানি৷ ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সানির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেছিলেন নাসরিন সুলতানা৷ অভিযোগে বলা হয়েছিল, ভুয়া একাউন্ট খুলে সানি তার (নাসরিন সুলতানার) আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছেন৷ ঐ মামলায় প্রায় দুই মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন সানি৷
মোহাম্মদ শহীদ
২০১৭ সালে বিসিবির কাছে শহীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন স্ত্রী ফারজানা আক্তার৷ অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালে তাদের বিয়ের সময় শহীদদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না, তবে সংসার ছিল সুখের৷ কিন্তু ২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর একাধিক নারী ভক্তের সঙ্গে শহীদের ঘনিষ্ঠতা হয়েছে বলে দাবি করেন ফারজানা৷ সেই সময় ‘ঝামেলা’ মিটিয়ে নেয়ার কথা বলেছিলেন শহীদ৷ পরের বছর সামাজিক মাধ্যমে নতুন বিয়ের ছবি প্রকাশ করেন তিনি৷
সাব্বির রহমান
২০১৭ সালে জাতীয় লিগের ম্যাচ চলার সময় কিশোর দর্শককে মারধরের অভিযোগে ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও ৬ মাস ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিলেন৷ ২০১৬ সালে বিপিএল চলার সময় হোটেল কক্ষে নারী অতিথি নিয়ে যাওয়ায় তাকে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল৷ ২০১৭ সালে মেহেদী হাসান মিরাজকে মারধরের অভিযোগে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়েছিল৷ এছাড়া আম্পায়ারকে গালি, নিজ গাড়ির চালককে পেটানোর মতো অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে৷
নাসির হোসেন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি টি-টেন লিগে দুর্নীতির অভিযোগ নাসিরসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে আইসিসি৷ নাসিরের নারীসঙ্গ নিয়ে একসময় অনেক কথাই চালু ছিল৷ নাসিরের মোবাইল সিম ও বান্ধবী সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন বিসিবি সভাপতিও৷ ২০১৮ সালে নাসিরের এক কথিত মডেল বান্ধবী তাদের সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যেভাবে ‘বোমা’ ফাটিয়েছিলেন তাতে সতীর্থ খেলোয়াড়েরা ছাড়াও ভীষণ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল বিসিবি৷
তানজিম হাসান সাকিব
জাতীয় দলে নতুন সুযোগ পাওয়া তানজিমের ফেসবুক পেজের বেশ কিছু পুরোনো স্ট্যাটাস নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে৷ এর মধ্যে কর্মজীবী নারীদের হেয় করে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসই বেশি সমালোচিত হচ্ছে৷ এমন স্ট্যাটাস দেওয়ার ব্যাপারে তানজিম ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানান বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস৷
সাকিব আল হাসান
টিভি ক্যামেরার সামনে অশালীন ভঙ্গিতে বাজে ইঙ্গিত করা, স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে দর্শককে পিটিয়ে আহত করা, আম্পায়ারদের সঙ্গে অসদাচরণ ইত্যাদি৷ এছাড়া অনাপত্তিপত্র না নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিপিএল খেলতে যাওয়ার মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে আনায় টেস্ট ও ওয়ানডে দল থেকে অবসর নেওয়ার হুমকি দিয়ে ছয় মাস নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব৷ এরপর জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর সেটি গোপন করায়ও এক বছর নিষিদ্ধ হন তিনি৷
মোহাম্মদ আশরাফুল
বিপিএলে ম্যাচ পাতানো ও স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা ২০১৩ সালে স্বীকার করেছিলেন আশরাফুল৷ এজন্য তাকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি৷
একসঙ্গে ৬ ক্রিকেটারের জাতীয় দল থেকে পদত্যাগ
২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হাবিবুল বাশার, আফতাব আহমেদ, শাহরিয়ার নাফীস, ফরহাদ রেজা, ধীমান ঘোষ ও মোশাররফ হোসেন রুবেল জাতীয় দল থেকে পদত্যাগ করেন৷ পরে জানা যায়, তারাসহ ১৪ জন ক্রিকেটার ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগের (আইসিএল) নবম দল হিসেবে যোগ হওয়া ঢাকা ওয়ারিয়র্সে খেলবেন৷ ১৭ সেপ্টেম্বর ঐ ১৪ ক্রিকেটারকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি৷