পোল্যান্ডে বিল পাসে প্রতিবাদ
২১ জুলাই ২০১৭ক্ষমতাসীন ‘আইন ও বিচার দল' বা ‘পিস' সুপ্রিম কোর্টের সংস্কারের এই বিতর্কিত প্রস্তাবটি পেশ করে৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিলটি সংসদের নিম্নকক্ষে অনুমোদিত হয়৷ রাজধানী ওয়ারশয় হাজার হাজার আন্দোলনকারী এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন৷
বিক্ষোভের উদ্যোক্তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে ৫০,০০০ মানুষের সমাবেশের কথা বললেও, পুলিশ ১৪,০০০ বিক্ষোভকারীর কথা বলেছে৷ বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রেসিডেন্ট আঞ্জ্রেই দুদা যেন আইনটিতে স্বাক্ষর না করেন৷
নতুন আইন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে সরকারের প্রভাব বৃদ্ধি করবে – যার ফলে বিচারবিভাগের নিরপেক্ষতার অন্ত ঘটবে, বলে বিলটির সমালোচকদের আশঙ্কা৷
পিস-নিয়ন্ত্রিত সংসদের নিম্নকক্ষে ২৩৫ জন বিধায়ক বিলটির পক্ষে ভোট দেন, বিপক্ষে পড়ে ১৯২টি ভোট৷ বিলটি এখনও সংসদের উচ্চকক্ষে অনুমোদিত হতে হবে ও প্রেসিডেন্ট দুদাকে তা স্বাক্ষর করতে হবে৷ সেনেটের কমিশন শুক্রবারেই বিলটি অনুমোদন করবে, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুশ্চিন্তা
ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পোলিশ রাজনীতিকডোনাল্ড টুস্ক পোল্যান্ডের বিকাশধারা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন – তবে পিস দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত দুদা টুস্কের সঙ্গে দেখা করতে চাননি, বলে টুস্ক জানান৷
বৃহস্পতিবারের ভোটের পর টুস্ক আবার একটি বিবৃতির মাধ্যমে দুদার সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করেন৷ টুস্ক বলেন যে, পোল্যান্ডের ইইউ-তে একঘরে হয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে, কেননা পোল্যান্ডের পদক্ষেপসমূহ ইউরোপীয় মূল্যবোধের বিরোধী৷
নতুন আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের কর্মপ্রক্রিয়া প্রভাবিত করার ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ করার ক্ষমতা পাবেন৷ বিলে সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান সব বিচারকের বরখাস্ত দাবি করা হয়েছে, এক প্রেসিডেন্ট যাদের নিয়োগ করেছেন, তারা ছাড়া৷
বিরোধীদের মতে, এই পদক্ষেপ আইনের শাসনের অন্ত ঘটাবে, কেননা বিচারবিভাগ রাজনৈতিক ক্ষমতাধারীদের দ্বারা প্রভাবান্বিত হবে, যার ফলে পোল্যান্ডে একটি অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু হবে৷
পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইইউ-এর সাত নম্বর সূত্র?
এই সূত্র অনুযায়ী মৌলিক অধিকার ভঙ্গের জন্য কোনো সদস্যদেশের উপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করা চলে – যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইতিহাসে এই সূত্র কোনোদিন প্রয়োগ করা হয়নি৷ কিন্তু বুধবার ইউরোপীয় কমিশনের ভাইসপ্রেসিডেন্ট ফ্রান্স টিমারমান্স বলেন যে, তিনি সাত নম্বর সূত্র বলবৎ করার কথাও ভাবতে পারেন৷
‘‘পোলিশ কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বিচারবিভাগ সম্পর্কীয় যে সব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার ফলে পোল্যান্ডে আইনের শাসনের উপর আক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে'', বলেন টিমারমান্স৷
২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসা যাবৎ পিস দল আইন-আদালত ও মিডিয়ার উপর তাদের নিয়ন্চ্রণ বাড়ানোর চেষ্টা করে আসছে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংগঠনের জার্মান শাখার পরিচালক ভেনৎসেল মিশালস্কি বলেছেন যে, সর্বাধুনিক বিলটি পোল্যান্ডে বিচারবিভাগের নিরপেক্ষতার অন্ত সূচিত করবে৷
এসি/ডিজি (এপি, রয়াটার্স, এএফপি)