বিদেশি কর্মী ছাড়া স্পেনের মৎস্য খাত প্রায় অচল
স্পেনে তরুণেরা মৎস্য খাতে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে না৷ তাই বিদেশি কর্মীদের চাহিদা অনেক৷ তবে সম্প্রতি ইইউর দেওয়া এক নিষেধাজ্ঞা আশঙ্কা তৈরি করেছে৷
বেদনাদায়ক স্মৃতি
১৭ বছর আগে সেনেগালের জেলে বাবু দিয়ুফ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে স্পেনের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর বুরেলা পৌঁছেছিলেন৷ যাত্রাপথটি ছিল খুব বিপজ্জনক৷ তাই এখনও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের এভাবে সাগর পাড়ি দিতে দেখা তার জন্য কঠিন৷
জেলে হওয়ায় সুবিধা
মাছ ধরায় পারদর্শী হওয়ায় স্পেনে নতুন জীবন শুরু করতে সমর্থ হয়েছিলেন দিয়ুফ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে স্পেনে সবচেয়ে বেশি মাছ ধরার নৌকা আছে৷ কিন্তু স্প্যানীয়রা এই খাতে কাজ করতে খুব আগ্রহী হচ্ছেন না৷ সে কারণে বিদেশি কর্মীদের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে৷
১০ জনের সাতজন বিদেশি
বুরেলার নৌকা মালিক সমিতির হুয়ান কার্লোস ওতেরো জানান, সেখানকার নৌকাগুলোতে কাজ করা প্রতি ১০ জনের মধ্যে সাতজনই বিদেশি কর্মী৷ বুরেলার বাসিন্দা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার৷ তারা ৪৪টি দেশ থেকে এসেছেন৷ এর মধ্যে ৯০ জন সেনেগালের, আর কেপ ভ্যার্ডের আছেন ২৪৪ জন৷
টিকে থাকার লড়াই
বিদেশি কর্মী থাকা সত্ত্বেও স্পেনের মৎস্য খাত টিকে থাকার সংগ্রাম করছে৷ বিশেষজ্ঞদের আশংকা, আগামী তিনবছরের মধ্যে বুরেলার মৎস্য খাত ভেঙে পড়তে পারে, কারণ সেখানকার অর্ধেক নৌকা ‘লংলাইন ফিশিং’ এর সঙ্গে জড়িত৷ কিন্তু মাছ ধরার এমন কৌশলের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ৷
তরুণেরা আগ্রহী নয়
দিয়ুফ যে নৌকায় কাজ করেন সেখানকার ক্যাপ্টেন ফ্রান্সিসকো গনজালেস গার্সিয়া বলছেন, বিদেশি কর্মী ছাড়া স্পেনের মৎস্য খাত টিকবে না৷ ‘‘খুব কম সংখ্যক স্প্যানিশ তরুণ এই কাজ করতে চায়, তাই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াই হচ্ছে ভবিষ্যৎ,’’ বলেন তিনি৷
বিমানভাড়া দিয়ে নিয়ে আসা হয় অনেককে
কাজের ফাঁকে ইন্দোনেশিয়ার জেলেরা৷ তারা এতটাই পারদর্শী যে অনেকসময় স্পেনের মালিকেরা তাদের বিমান ভাড়া দিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে নিয়ে আসেন৷
আয় নিয়ে সন্তুষ্ট দিয়ুফ
মাছ ধরার কাজ করে যে আয় হয় তা নিয়ে সন্তুষ্ট দিয়ুফ৷ কারণ আয় দিয়ে তিনি বাসা ভাড়া দিতে পারেন, পরিবারের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন এবং সেনেগালেও টাকা পাঠাতে পারেন৷ কিন্তু ভবিষ্যতের জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করছেন তিনি৷ ট্রাক চালানো, ঘাস কাটার কাজ শিখছেন৷