বিদেশীরা ছেড়ে যাচ্ছেন জার্মানি
৩ মে ২০০৫চয় সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য বিদেশীদের ভারপ্রাপ্ত দপ্তরগুলো মুছে ফেলেছে৷ জার্মানিতে বসবাসরত বিদেশীদের সংখ্যা কি সত্যিই কমে যাচ্ছে ?
একজন বিদেশী বলছিলেন যে বিগত বছরগুলোতে লক্ষ্যনীয় কিছু পরিবর্তন হয়েছে৷ অনেকের ধারণা বিদেশীদের সংখ্যা সবমিলে প্রায় ১৫-১৮ শতাংশ কমে গেছে৷ যদি এরকম চলতে থাকে তবে তাঁরা সংখ্যালঘুদের পর্যায়ে এসে দাঁড়াবে৷
অথচ একটু আড়ি পাতলেই শোনা যাবে যে দলে দলে বিদেশীরা নাকি জার্মানির দিকেই আসছে৷ ইউরোপীয় ফোরামের ফ্রিডরিশ হেকমান বলেন, এটা একটু বাড়িয়ে বলা৷ গত বছর প্রায় ৭ লক্ষ বিদেশী জার্মানিতে এসেছে সত্যি কিন্তু অন্যদিকে দেশ ছেড়ে চলে গেছে সব মিলে ৫ লক্ষেরও বেশি৷ অর্থাত্ বর্তমানে জার্মানিতে বসবাসরত বিদেশীদের সংখ্যা দেড় লক্ষ৷ ৯০ এর দশকের তুলনায় এ সংখ্যা নিঃসন্দেহে অনেক কম৷
তিনি আরো বলেন যে এটা ভূলে গেলে চলবে না যে বিদেশীরা সারাক্ষণ আসা যাওয়ার মধ্যেই আছে৷ যদি জনসংখ্যার দিকে ভাল করে তাকানো হয় তাহলে দেখা যাবে যে বিগত বছরগুলোতে সংখ্যা সত্যিই কমেছে৷
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞদের মতে বিদেশীদের জনসংখ্যা সত্যিই কমে যাচ্ছে৷ আগামী বছরগুলোতে কর্মরত তরুণদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কমে যাবে ঠিকই কিন্তু ক্রমশঃই অনেক বেশি সংখ্যক অবসরভোগীদের ভাতা নিশ্চিত করার জন্য এই তরুণদেরই অর্থ দিতে হবে৷ এ কারণেই খুব দ্রুত জার্মানির প্রয়োজন প্রচুর অভিবাসীর৷
এ প্রসংগে হেকমান বলেন যে ২০১০-২০১২ সালের মধ্যে জার্মানির জনসংখ্যার এমন আমূল পরিবর্তন হবে যে তখন অবিবাসীদের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে দেখা যাবে, তাঁদের উপস্হিতি হবে কাংখিত৷এখন অবস্হা অবশ্যই অন্যরকম, বেকার সমস্যা চারিদিকে, সবাই কাজ খুঁজছে৷ জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞদের মতে একসময় সবার কাছেই পরিস্কার হবে, যে অভিবাসীদের প্রয়োজন আছে এবং তাঁদের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়ছে৷
আরো একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বিদেশী যারা আট বছরেরও বেশি সময় ধরে জার্মানিতে বসবাস করছে, তাঁরা চাইলেই জার্মান নাগরিকত্ব দাবী করতে পারেন কিন্ত তাঁরা তা চান না৷এর অনেকগুলো কারণ আছে, জানান ফ্রিডরিশ হেকমান৷ তিনি বলেন যে বেশিরভাগ বিদেশীই তাঁদের নিজস্ব নাগরিকত্বকে ধরে রাখতে চান- এটি তাদের কাছে একটি পরিচয় বহন করে, তা তাঁরা কিছুতেই হারাতে চান না৷ জার্মানিতে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান না থাকায় অভিবাসীরা মনে করেন জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণ করার অর্থ হচ্ছে আত্মপরিচয়ের একটি অংশকে হারিয়ে ফেলা৷
৩০ শতাংশের কিছু বেশি অভিবাসী জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং এর সুবাদে জার্মানিতে সব রকমের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন৷
তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হলে জার্মানি তা থেকে লাভবান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷কিন্ত অনেক তুর্কি মনে করেন, যে নাগরিকত্ব গ্রহণের অনেক বিড়ম্বনা তাঁদেরকে সইতে হবে৷আছে সময়ের ব্যাপার, আছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঝামেলা৷ তাঁদের একজন বললেন যে আগ্রহ সবারই আছে- কিন্ত এর সাথে আছে নানা ধরনের কাগজপত্র জমা দেয়ার জটিলতা৷শেষ পর্যন্ত সবাই বেশ বিরক্ত হয় এবং ধৈর্য হারিয়ে ফেলে৷