‘বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে’
২ এপ্রিল ২০১২বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বা পিডিবি'র দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হয়েছে৷ তাদের হিসেব মতে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৫ হাজার মেগাওয়াট৷ আর চাহিদা রয়েছে ৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি৷ কিন্তু গ্রীষ্মকাল শুরুর আগেই ঢাকাসহ সারা দেশে শুরু হয়েছে লোডশেডিং৷ এমনকি সেচের জন্যও প্রতিশ্রুত বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছেনা৷
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৈফিক ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, বিদ্যুতের উৎপাদন যেমন বেড়েছে, চাহিদাও বেড়েছে তার সঙ্গে৷ গত এক বছরে এক কোটিরও বেশি নতুন সংযোগ দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু উৎপাদনের সঙ্গে চাহিদার সমন্বয় করতে সময় লাগবে৷ ২০১৫ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার মেগাওয়াট৷ তার আগেই চাহিদা এবং উৎপাদনের সমন্বয় ঘটবে৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সোমবার একই ধরনের কথা বলেছেন৷ তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন যেমন বাড়ছে, চাহিদাও বাড়ছে৷ অতীতের সরকার বাড়তি কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি৷ অতীতের চাহিদার সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন চাহিদা৷ আর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে বলেই পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানি বাড়ছে৷ গত বছরে রপ্তানি বেড়েছে শতকরা ৪১ ভাগ৷
তবে বিরোধী দল বিএনপি মনে করে বর্তমান সরকারের আমলে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার তথ্য সঠিক নয়৷ তাদের প্রশ্ন, তাহলে এই বিদ্যুৎ কোথায় গেল? বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার দাবি করেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন তো বাড়েই নি বরং দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ান হয়েছে৷ এতে সাধারণ মানুষের কোন লাভ হয়নি৷ শুধুমাত্র কিছু ব্যক্তি লাভবান হয়েছে৷
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর, ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল চালিত ২০টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে গেছে৷ তবে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে৷ আরো প্রায় সমপরিমাণ কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়েছে৷ পিডিবি জানায়, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্দেশ্য হল জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুতের চাহিদা মেটান৷ সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে৷ দীর্ঘ মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লাভিত্তিক এবং পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ