1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বিধ্বংসী ঝড়

১৩ জুন ২০১৪

মধ্য ইউরোপে পর পর কয়েকদিন খুব গরম পড়লেই তারপর ‘কালবৈশাখী' হবার সম্ভাবনা থাকে৷ গত সোমবার রাত্রে সে রকমই একটি ঝড় নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যকে বিধ্বস্ত করেছে৷ ছ'জন নিহত, আহত পঞ্চাশ জনের বেশি৷

https://p.dw.com/p/1CHIi
ছবি: picture-alliance/dpa

সোমবার রাত্রে বারংবার ঝলসে উঠেছে বিদ্যুৎ, তার পরেই প্রচণ্ড বাতাস, বৃষ্টি, উপড়ে গেছে বড় বড় গাছ, ভেঙে পড়েছে গাছের ডাল৷ কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হয়েছে৷ তবে গাছ ভেঙে পড়ে বাড়ি এবং বিশেষ করে রাস্তায় পার্ক করা গাড়ির ক্ষতিই হয়েছে বেশি৷ গাছের ডাল ভেঙে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক মানুষ৷

হুইটসানটাইড পরবের তিনদিনের ছুটিটা ছিল রৌদ্রকরোজ্জ্বল এবং ত্রিশ ডিগ্রি পার করা গরম৷ তার পরেই পশ্চিমের ঠান্ডা বাতাস এসে ধাক্কা খায় পুবের গরম বাতাসের সঙ্গে৷ ফলে ফ্রান্সের দক্ষিণাংশ এবং জার্মানির পশ্চিমাংশের উপর ন-দশ কিলোমিটার উচ্চতার বর্ষার মেঘ তৈরি হয়ে যায়৷ সেই মেঘ থেকেই এই ঝড়ের উৎপত্তি৷

ঘণ্টায় একশো কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাস ছাদের টালি উপড়ে ফেলে ফ্রিসবি-র চাকার মতো সেগুলোকে উলটোদিকের বাড়িগুলোর দিকে নিক্ষেপ করেছে; ফলে সে সব বাড়ির বাসিন্দারা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন৷ মর্মান্তিক হল সেই সব মানুষদের পরিণতি, যারা নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারেননি, কিংবা নিতে গিয়ে আরো বড় বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন৷

ড্যুসেলডর্ফে কারোর একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে ন'জন মানুষ বাগানের মাঝখানে একটি কাঠের ঘরে ঢুকে ঝড় থেকে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন৷ একটি গাছ ভেঙে পড়ে তাদের তিনজনের প্রাণ নেয় এবং আরো তিনজনকে গুরুতরভাবে আহত করে৷ কোলোনের কাছে বছর পঞ্চাশেকের এক সাইকেল চালক গাছ ভেঙে মাথায় পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন৷ ক্রেফেল্ডের কাছে এক ২৮-বছর-বয়সি সাইকেল চালক প্রাণ হারিয়েছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে – ঝড়ে গাছ ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়েছিল৷

Hamburg-Fischmarkt Orkan Xaver
সোমবার রাত্রে বিধ্বংসী এক ঝড় নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যকে বিধ্বস্ত করেছবি: Reuters

জার্মানি সবুজ দেশ, এখানে গাছগাছালির কোনো কমতি নেই, বিশেষ করে বাড়িঘর, রাস্তা বা মোটরওয়ে এবং রেললাইনের কাছাকাছি৷ কাছেই হাজার হাজার গাছ ভেঙে পড়ার একটি ফল হয়েছে বহু রাস্তা বন্ধ৷ অপরদিকে ট্রেন চলাচল বিপুলভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং বলতে কি – বৃহস্পতিবার সকাল অবধি পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি৷

শুধুমাত্র নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে ১৬টি ট্রেন এখনও বিভিন্ন স্থানে রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে – কেননা গাছ ভেঙে পড়ে লাইন ব্লক করেছে কিংবা ওভারহেড ট্রান্সমিশন কেটে গেছে৷ বহু লোকাল ট্রেন বাতিল হওয়ার ফলে মানুষজন নিজের নিজের গাড়িতে কাজে যাবার চেষ্টা করেছেন – ফলে মঙ্গলবার সারা রাজ্যে রাস্তা ও মোটরওয়ে মিলিয়ে যানজটের সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ছিল ৪০০ কিলোমিটার!

ঝড় চলাকালীন ড্যুসেলডর্ফ বিমানবন্দর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বন্ধ ছিল, বহু ইনকামিং ফ্লাইটকে অন্যত্র ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ হামবুর্গ-বার্লিন রেলপথটিও বহু স্থানে গাছ ভেঙে পড়ার কারণে বুধবার পর্যন্ত বন্ধ ছিল, বৃহস্পতিবার সেটি খোলা সম্ভব হয়েছে৷ দুর্যোগ নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া ছাড়ার পর পাশের হেসে রাজ্যে প্রচণ্ড বৃষ্টি নামিয়ে বহু পথঘাট ভাসিয়েছে৷ শুক্রবার থেকে গোটা জার্মানির আবহাওয়া শান্ত হলেও, দক্ষিণের বাভারিয়া অঞ্চলে ঝড়জলের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে৷

মোট কথা, বিগত বিশ বছরের মধ্যে তীব্রতম ঝড় যেন চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করে দিল যে, আধুনিক সভ্যতা প্রকৃতির রোষের কাছে ঠিক কতোটা অপ্রস্তুত এবং অসহায়৷

এসি/এসবি (ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য