বিভাজনের স্মৃতি যেভাবে ধরে রেখেছে বার্লিন
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যকার সীমান্ত হঠাৎ করে খুলে যায়৷ সেই রাতে ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের সামনে শ্যাম্পেনের বোতল খুলে উৎসব হয়েছিল৷ ইতিহাসে পরিণত হয়েছিল বার্লিন প্রাচীর৷
ব্রান্ডেনবুর্গ গেট
১৯৬১ সালের আগস্ট থেকে ১৯৮৯ সালের নভেম্বর অবধি ২৮ বছর দুই মাস ২৭ দিন বার্লিনকে বিভক্ত করে রেখেছিল বার্লিন প্রাচীর৷ ব্রান্ডেনবুর্গ গেট দীর্ঘ সময় জার্মানির বিভাজনের প্রতীক ছিল৷ এমনকি ১৯৮৯ সালের নয় নভেম্বর বার্লিন প্রাচীরের পতনের পরও ব্রান্ডেনবুর্গ গেট পার হওয়ার উপায় ছিল না৷ সেবছরের ২২ ডিসেম্বর অবশ্য সেই অবস্থায় পরিবর্তন আসে৷ বার্লিনবাসী তখন সহজেই বাধাহীনভাবে ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্কটি উপভোগের সুযোগ পান৷
ইস্ট সাইড গ্যালারি
বার্লিনের ফ্রিডরিশহাইনে স্প্রি নদীর তীরে এক দশমিক তিন কিলোমিটার চওড়া তথাকথিত ‘হিন্টারল্যান্ড ওয়াল’ হচ্ছে দ্য ইস্ট সাইড গ্যালারি৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা ১৯৯০ সালে বার্লিন প্রাচীরের এই অংশে নানা ছবি এঁকেছিলেন৷ এই প্রাচীরের কাছেই ওবারবাওমব্রুকের অবস্থান, যা এক পর্যটন আকর্ষণ৷
বার্লিন প্রাচীর মেমোরিয়াল
সাবেক ‘ডেথ স্ট্রিপ’ দেখা যাচ্ছে এখানে৷ অতীতের অবস্থা তুলে ধরতে বার্লিন প্রাচীরের ৮০ মিটার লম্বা একটি অংশ এবং গার্ড টাওয়ারটি পুর্ননির্মাণ করা হয়েছে৷ বার্লিন প্রাচীর টপকাতে গিয়ে নিহতদের স্মরণে এই মেমোরিয়ালটি গড়ে তোলা হয়েছে৷
দেয়াল যেখানে ছিল
বার্লিন প্রাচীর বলতে গেলে পুরোটাই হারিয়ে গেছে৷ বরং পূর্ব এবং পশ্চিম এখন সমানতালে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ তারপরও পর্যটকদের ধারণা দিতে বার্লিনের কেন্দ্রে যেখানে আগে দেয়াল ছিল, সেখানে খোয়া দিয়ে এমন লম্বা লাইট টেনে দেয়া হয়েছে৷
চেকপয়েন্ট চার্লি
এই সীমান্ত পারাপারের চৌকিটি বার্লিনের অন্যতম পরিচিত স্থান৷ এই চেকপয়েন্ট দিয়ে শুধুমাত্র বিদেশি এবং কূটনীতিকরা সীমান্ত পার হতে পারতেন৷ বার্লিন দেয়াল তোলার কিছুদিন পর ১৯৬১ সালের অক্টোবরে এখানে সোভিয়েত এবং মার্কিন ট্যাংকগুলো মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল৷ সেই সময় বেশ উত্তেজনাকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল৷
বিচ্ছেদের প্রাসাদ
অশ্রুসিক্ত চোখে এখানে প্রিয়জনকে বিদায় জানানো হতো৷ পশ্চিম বার্লিনের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন শতশত মানুষ ফ্রিডরিশস্ট্রাসের এই সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে পূর্ব জার্মানি ত্যাগ করতেন৷ সাবেক সেই ‘ডিপারচার টার্মিনাল’ এখন বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের জোর করে বিচ্ছিন্ন করার এক স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রয়ে গেছে৷
হোয়েনশ্যোনহাউজেন মেমোরিয়াল
কমিউনিস্ট একনায়কতন্ত্রের শিকার ভুক্তভোগীদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় সাবেক এই স্টাসি কারাগার৷ ১৯৯৪ সাল এটিকে মেমোরিয়ালে পরিণত করা হয়৷ কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিতে আটককৃতদের আটকাবস্থায় কিভাবে রাখা হতো এবং কী পন্থায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো সেসম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এখানে৷