বিরোধীদের সংসদে আমন্ত্রণ
২৫ জানুয়ারি ২০১৯তাঁর ভাষণে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন আমরা বিরোধীদের সংসদে উপস্থিতি চাই৷ সংসদে বিরোধী দলের যে কোনো সদস্যের ন্যায্য ও যৌক্তিক প্রস্তাব, আলোচনা-সমালোচনার যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে৷ আমি বিরোধী দলের নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি৷''
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দেশবাসী, নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান৷ তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের এই বিজয় সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সহযোগিতার কারণেই সম্ভব হয়েছে৷
২৫ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের পরাজয়ের কারণ তুলে ধরে বলেন, বিএনপির প্রতীকে জামায়াতের নির্বাচন তরুণ প্রজন্ম প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এছাড়া মনোনয়ন বাণিজ্য, একই আসনে তিনের অধিক প্রার্থী, দুর্বল প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া, নিজেদের সাফল্য তুলে ধরতে ব্যর্থতাও হেরে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী অগ্নি-সন্ত্রাস জনগণ মনে রেখেছে৷''
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ভাষণে সকল মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার দৃঢ় অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন৷
এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরের সাফল্যগাঁথাও তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতনভাতা বিগত ১০ বছরে আড়াই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ সরকারি ও বেসরকারি খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও সমহারে বেড়েছে৷ এসময় তিনি পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি এবং কৃষিজীবীদের সার, বীজসহ বিভিন্ন উপকরণে ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে প্রণোদনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি৷
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একদিকে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে রপ্তানি বাণিজ্যও প্রসারিত হয়েছে, যার সুবিধা সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন৷ শেখ হাসিনা আরো বলেন, পদ্মাসেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহাসড়কগুলোকে চার-লেনে উন্নীতকরণসহ মেগা প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হওয়ায় সাধারণ মানুষের বর্তমান সরকারের উপর আস্থা জন্মেছে৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০-২০২১ সালে মুজিব বর্ষ এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন করা হবে৷তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক খাতকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন৷ আর এর কৌশল হিসেবে ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন৷
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে দল-মত নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা৷ জনগণের সহযোগিতায় তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভাষণ শেষ করেন৷
এফএ/এসিবি (বাসস)