বিশ্ব জুড়ে রেমিটেন্স প্রবাহ কমবে
১৭ জুলাই ২০০৯রিপোর্টে বলা হয়, যেসব দেশের অর্থনীতির সঙ্গে অ্যামেরিকার অর্থনীতি জড়িত তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ আর ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর জন্য বিষয়টি হবে আরো ভয়াবহ ৷ কারণ সেখানে রেমিটেন্স প্রবাহ কমবে ১৫ থেকে ১৭ভাগ৷
রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ২০০৮ এর সেপ্টেম্বরে অ্যামেরিকা থেকে বিশ্ব মন্দার যে-প্রভাব শুরু হয় তা বিশ্বের সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ছড়িয়ে পড়ে৷ আর রেমিটেন্স কতোটা নামবে বা বাড়বে তা অনেকাংশেই নির্ভর করছে যে- দেশগুলো বিদেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে থাকে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির উপর৷
এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে বিশ্ব জুড়ে রেমিটেন্স প্রবাহ ২০০৭ এর তুলনায় বাড়ে ১৫ ভাগ৷ অর্থা ২৮৫বিলিয়ন ডলার থেকে ৩২৮বিলিয়ন ডলারে দাড়াঁয়৷ এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বিশ্বব্যাপী রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছিল শতকরা ৩৩ ভাগ৷ ভারত একাই ৫২ বিলিয়ন ডলার আয় করে৷ অন্যদিকে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন এবং ফিলিপাইনস-এ রেমিটেন্স বাড়ে ২০ভাগ৷ বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০০৯ এ রেমিটেন্স প্রবাহ কমলেও ২০১০ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলো এই ঘোর প্যাঁচ থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসতে পারবে৷ তাদের মতে, রেমিটেন্স প্রবাহ তখন বর্তমান হার থেকে বাড়বে ২.৯ ভাগ৷
বিশ্বের যে-সব দেশে সবচেয়ে বেশি অভিবাসী শ্রমিক উপস্থিত হয় তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, মালয়শিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইটালি, স্পেন এবং মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলো ৷ কিন্তু প্রতিটি দেশই অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে তাদের অভিবাসী শ্রমিক গ্রহণের সংখ্যায় কাট-ছাঁট করে৷ যার ফলে কমে যায় বিদেশী শ্রমিকদের যাতায়ত৷ বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা গ্রুপের পরিচালক হানস টিমার বলছেন, একটা ঝুঁকি থেকেই যায়৷ কর্মী গ্রহণকারী দেশগুলোতেই যে হারে বেকারত্ব বাড়ছে তাতে, দেশগুলো অভ্যন্তরীণ চাকরির চাহিদা মেটাতে শ্রমিক নেয়ার হার আরো কমিয়ে দিতে পারে৷ বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট মতে, এবছরের শেষ নাগাদ অর্থনীতিতে সবচেয়ে খারাপ এক পরিস্থিতি তৈরি হবে৷ তবে এর পরই বিশ্ব অর্থনীতি শতকরা দুইভাগ বাড়বে ২০১০ সাল নাগাদ ৷ আর ২০১১ নাগাদ ৩.২ ভাগ বাড়বে ৷
বিশ্ব ব্যাংক তার রিপোর্টে বলছে, গেল বছর সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স ঘরে এনেছে ভারত ৷ যার পরিমাণ ৫২ বিলিয়ন ডলার ৷ এর পরই আছে চীন ৪০.৬ বিলিয়ন ডলার, মেক্সিকো ২৬.৩ বিলিয়ন ডলার, ফিলিপাইনস ১৮.৬ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১০.৭ বিলিয়ন ডলার, নাইজিরিয়া ১০ বিলিয়ন ডলার, এবং বাংলাদেশ ৯ বিলিয়ন ডলার৷
বিশ্ব ব্যাংকের এই রিপোর্টের সহকারী লেখক, দীলিপ রাথা বলছেন, রেমিটেন্স হল বহু পরিবারের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে৷ তাই রেমিটেন্স প্রবাহের সামান্য হের ফের অনেক বড় রকমের প্রভাব রাখে দেশগুলোর অর্থনীতিতে ৷
প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক