বিশ্বকাপের দেয়াল-লিখন
৫ মে ২০১৪রিও পৌরসভার অনুশাসনটির নাম হল ‘গ্রাফিতে-রিও'৷ এই অনুশাসন অনুযায়ী কিছু বাছাই – এবং তালিকাবদ্ধ – সরকারি ভবন ছাড়া বাকি সব প্রকাশ্য স্থানে দেয়াল অঙ্কন চলবে: তবে সেই সব গ্র্যাফিটি বাণিজ্যিক, যৌনরসাত্মক, জাতিবাদী কিংবা বৈষম্যবাদি হলে চলবে না৷
রিও-র পৌরকর্তাদের অতোটা চিন্তা করার কোনো কারণ ছিল না৷ ফুটবল পাগল ব্রাজিলে বিশ্বকাপের গ্র্যাফিটির উপজীব্য স্বভাবতই ফুটবলকেন্দ্রিক হবে৷ তাই কোনো গ্র্যাফিটির ছবি ২০০২ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল দলের ফরোয়ার্ড রোনাল্ডো-র৷ কোনোটি ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্মরণে: যা ঘটেছিল সুদূর ১৯৫৮ সালে, সুইডেনে৷
তবে সব দেয়াল অঙ্কনই যে নিরামিষ, এমন নয়৷ যে মারাকানা স্টেডিয়ামে এই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে, তারই অদূরে একটি গ্র্যাফিটিতে বিশ্বকাপের ম্যাস্কট বা প্রতীকী প্রাণী, যা কিনা একটি আর্মাডিলো অর্থাৎ পিঁপড়েখেকো, সেই নির্দোষ জীবটি আইনের প্রতীক ন্যায়ের নারীসুলভ মূর্তিটিকে বলাৎকার করছে৷ স্বভাবতই আইনের দু'চোখ বাঁধা৷
ম্যাস্কটের পাশেই আবার লেখা: ‘‘একটি বিশ্বকাপের কারণে কতোজন মানুষ বাস্তুহারা হয়?'' আরেকটি দেয়াল অঙ্কনে বিশ্বকাপের ম্যাস্কট ‘ক্র্যাক' ধূমপান করছে, ‘আফটার দ্য কাপ' টি-শার্ট পরে৷আরেকটি গ্র্যাফিটিতে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের উঠতি তারকা নেইমার এবং সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের কাপটিকে দেখা যাচ্ছে: কিন্তু ওদিকে আবার একটি কালাশনিকভ রাইফেলের ছবি, তার নল থেকে একটি গোলাপ বেরিয়ে রয়েছে৷
আবার এ কথাও সত্যি যে, হালের বায়ার্ন স্টার ফ্রঙ্ক রিবেরি থেকে শুরু করে ব্রাজিলের মহিমামণ্ডিত অতীতের রোমারিও কিংবা পেলে, রিও-র প্রাচীরে-প্রাকারে ফুটবলের কিংবদন্তিরা সর্বত্র৷ অন্যত্র পর্তুগালের সাবেক মহারথীরা, যেমন গ্যারিঞ্চা কিংবা জেয়ারজিনিহো৷ অন্য দেয়াল চিত্রশিল্পীদের কাছে ‘কোপা' বা কাপ নিপীড়নের নামান্তর৷ তাদের গ্র্যাফিটিতে পাওয়া যাবে মলোটভ ককটেল - মানে আগুনে বোমা৷
এমনকি যে সব শিল্পী রিও, তার কার্নিভাল এবং বিশ্বকাপের সমর্থক, তাদের দেয়াল অঙ্কনেও দেখতে পাওয়া যাবে, নেইমার কীভাবে একটি বলকে কিক করছেন: তবে বলের উপর যার মুখ আঁকা, তিনি হলেন ফিফা-র প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটার৷
এসি/এসবি (এএফপি)