বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর পাঠাগার যেগুলি
গত চার হাজার বছর ধরে জন্ম নিয়েছে একের পর এক পাঠাগার৷ এর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও তাক লাগানো পাঠাগার কোনগুলি, জানুন এই ছবিঘরে...
প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে
ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির সেন্ট্রাল লাইব্রেরি উডির স্থাপত্যশৈলী সেই দেশের প্রাকৃতিক উপাদান থেকে উদ্বুদ্ধ৷ পাঠাগারটির বাইরের কাঠের ছাদ ও ঢেউ-খেলানো ধাঁচ মনে করিয়ে দেয় ফিনল্যান্ডের সমুদ্রতট ও ঘন তুষারের কথা৷ এই পাঠাগারের বৈশিষ্ট্য, এখানে পড়ার বই ছাড়াও রয়েছে একটি জাউনা এবং একটি সিনেমা হলও৷
আগুনের পরেও...
জার্মানির ভাইমার শহরের ‘হেরৎসোগলিশে বিবলিওঠেক’ প্রতিষ্ঠার ৩০০ বছর পর ১৯৯১ সালে নাম পাল্টে হয় ডাচেস আনা আমালিয়া লাইব্রেরি৷ এই পাঠাগার ২০০৭ সালে ভয়াবহ আগুনের কারণে নষ্ট হয়ে গেলেও, আগুন লাগার আগের মতো করেই সাদা প্রস্তর দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়৷
ফুটবল মাঠ না পাঠাগার?
নেদারল্যান্ডসের ডেল্ফট প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারটি৷ পাঠাগারের ছাদ আগাগোড়া সবুজ ঘাসে মোড়া, যার ফলে অনেকেই মাঠ ভেবে ভুল করতে পারেন পাঠাগারকে৷ কিন্তু এই পাঠাগারের সবচেয়ে বড় চমক ৪২ ফুট উঁচু একটি মিনার, যার চারতলার গোটাটাই আগাগোড়া বইয়ে ঠাসা৷
পর্তুগালের গর্ব যে পাঠাগার...
২০১৩ সালে ‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ বিশ্বের তাক লাগানো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পর্তুগালের কোয়েম্ব্রা শহরের ‘বিবলিওটেকা হোয়ানিনা’কে৷ পর্তুগিজ রাজা পঞ্চম জনের সময়ে তৈরি এই পাঠাগারের পুরোটাই টিউলিপ কাঠ ও আবলুস কাঠ দিয়ে বানানো৷ বর্তমানে এই পাঠাগারটি কোয়েম্ব্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের আওতায়৷
নতুন-পুরোনো একসাথে...
দু’হাজার বছর আগে আগুনে পুড়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া পাঠাগার ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত পাঠাগার৷ বলা হত, তৎকালীন বিশ্বের সমস্ত জ্ঞানের সম্ভার রয়েছে সেই পাঠাগারে, যা প্রায় পাঁচ লাখ প্যাপিরাস কাগজের স্ক্রলে লেখা ছিল৷ ২০০২ সালে নতুন করে চালু হয় এই পাঠাগার, যা তৈরি করতে খরচ হয় ২২ কোটি মার্কিন ডলার৷
জাতিসংঘের তালিকাতেও এই পাঠাগার
সুইজারল্যান্ডের সেন্ট গালেন শহরের অ্যাবে পাঠাগারে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার বছর পুরোনো বই৷ এমনকি সেখানে রাখা আছে একটি মিশরীয় মমিও৷ পাঠাগারটির ‘ব্যুশেরজাল’ অংশটি জাতিসংঘের মতে ইউরোপের প্রাচীনতম নির্মাণ পরিকল্পনার অন্যতম৷
প্রেসিডেন্টের যে লাইব্রেরি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস স্থাপিত হয় ১৮০০ সালে, কিন্তু তার চোদ্দ বছর পরেই ব্রিটিশরা তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ দেশের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন পাঠাগারটির সংস্কারকার্যের জন্য ২৪ হাজার মার্কিন ডলার অর্থ দান করেন নিজের ব্যক্তিগত সংগ্রহের মোট সাড়ে ছয় হাজার বই বিক্রি করে৷
কাঠে কাঠে ছয়লাপ
আয়ারল্যান্ডের ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের পাঠাগারের ‘লং রুম’ দৈর্ঘ্যে ৬৪ মিটার ও প্রস্থে ১২ মিটার৷ এই ঘরের গোটাটাই ওক কাঠ দিয়ে তৈরি৷ শুধু ঘরের দেওয়ালই নয়, ১৮৫৮ সালে মেরামতের কাজের সময় কর্তৃপক্ষ ঘরটির ছাদও ওক কাঠ দিয়ে তৈরি করেন৷
চীনের তাক লাগানো পাঠাগার
তিন কোটি বই ও অন্যান্য পাঠ্যসামগ্রীতে ভরা চীনের জাতীয় পাঠাগার বিশ্বের সাতটি বৃহত্তম পাঠাগারের অন্যতম৷ ১৮০৯ সালে এই পাঠাগার স্থাপনকালে এর নাম দেওয়া হয় ‘ক্যাপিটাল লাইব্রেরি’, যা পরে ১৯২৮ সালে বদলে হয় ‘বেইজিং লাইব্রেরি’৷ জাতীয় পাঠাগারের মর্যাদায় নামকরণ করা হয় ১৯৯৮ সালে৷