বিস্ফোরণে ‘পঙ্গু’ এক পরিবারের গল্প
৪ আগস্ট বৈরুতে বিস্ফোরণে মারা যান ১৭৯ জন, আহত হন ৬০০০ জন৷ নিহত, আহতদের পরিবারের এখন কী অবস্থা তা বুঝতে ছবিঘরে দেখুন আদেলের পরিবারের জীবন...
ধনী থেকে গরিব
এক গুদামে রাখা দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে যায় বৈরুতের একটা অংশ৷ ধ্বংস হয়ে যায় অনেক বাড়ি-ঘর, অফিস-আদালত৷হঠাৎ পথে বসে যায় অনেক পরিবার৷ অনেকেই এখন আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে আশ্রিত৷
আদেলের পরিবার
রিটা ফারাজ ওঘলোর বাড়িও ধ্বংস হয়ে যায় বিস্ফোরণে৷ তার স্বামী আদেলের একটা পা ক্ষতবিক্ষত৷ চিকিৎসার খরচ বহণ করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে৷ স্বামী, দুই সন্তান, মা, সৎ বাবা আর এক বোনকে নিয়ে খুব কষ্টে কাটছে রিটার জীবন৷
যা ঘটেছিল
৪ আগস্টের বিস্ফোরণের সময় আদেল ছিলেন রাস্তায়৷ হঠাৎ বিকট একটা শব্দ,আকাশ ঢেকে যেতে লাগল ধোঁয়ায়৷ আদেল পড়ে গেলেন রাস্তায়৷ দেখলেন ডান পা-টা ক্ষতবিক্ষত৷ চিৎকার করে বলছিলেন, ‘‘বাঁচাও, বাঁচাও৷’’ কিন্তু অনেকে এগিয়ে এলেও আদেলের পায়ের অবস্থা দেখে ভয়ে চলে যাচ্ছিলেন৷
পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা
এখন কেমন আছেন জানাতে গিয়ে আদেল বললেন, ‘‘আর ওষুধে কাজ হচ্ছে না৷ তাই এখন ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছি৷ মাঝে মাঝে পায়ে নিজেই আলতো করে আঘাত করি৷ তারপর ব্যথায় কাঁদতে শুরু করি৷মাঝে মাঝে আবার পা-কে বলি, পাঁচ মিনিটের জন্য (ব্যথা থেকে) একটু মুক্তি দাও৷’’
বাবার মতো হবে না তো!
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলা লেবানন যুদ্ধে পা হারিয়েছিলেন আদেলের বাবা৷ আদেলের খুব মনে পড়ে বাবার কথা, ‘‘আমার বাবার পঙ্গুত্ব দেখে দেখে বড় হয়েছি আমি৷ তার হাতেও ব্যথা ছিল৷ আমার মতো বাবার পায়েও স্ক্রু লাগানো ছিল৷’’
দায়ী সরকার
লেবাননের অধিকাংশ মানুষের মতো আদেল-রিটার পরিবারও ৪ আগস্টের বিস্ফোরণের জন্য সরকারকেই দায়ী মনে করে৷ আদেলের মতে, ‘‘তারা (সরকার) আসলে দায়িত্ব নেয়ার উপযুক্তই নয়৷ তারা তো কখনো নিজেদের মানুষকে, দেশকে রক্ষা করেনি৷ তারা শুধু নিজেদেরই রক্ষা করেছে এবং এক দল গুন্ডা তাদের সমর্থন দিচ্ছে৷’’