বিহারেও নয় এনআরসি
২০ ডিসেম্বর ২০১৯এদিকে এনআরসি, সিএএ নিয়ে জাতিসঙ্ঘের ব্যবস্থাপনায় গণভোটের দাবি তুলে, পরদিনই পিছিয়ে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ শুক্রবার কলকাতায় দলের সদর কার্যালয় তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, বিতর্কিত আইন দুটি নিয়ে জনমত যাচাইয়ের কথা বলেছিলাম৷ ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের দিয়েই, দেশীয় তদারকিতে৷ এদিন কেন্দ্র সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও কিছুটা সুর নরম করেছেন মমতা৷ মোদীর উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘দেশ এবং মানুষের স্বার্থে এনআরসি, সিএএ প্রত্যাহার করুন৷ এটা হার-জিতের কোনো বিষয় নয়৷'' তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত এতে হস্তক্ষেপ করা এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনটি প্রত্যাহার করা৷
উল্লেখ্য, জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট করার মন্তব্যটির একসুরে বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস, বিজেপি এবং বামপন্থিরা৷ তারপরই মমতার এক পা পিছু হটা৷ এর মধ্যে তাঁকে উৎসাহিত করার মতো একটাই খবর এলো শুক্রবার, বিহার থেকে৷ বিজেপির এনডিএ জোটের শরিক হয়েও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ঘোষণা করলেন, তাঁর রাজ্যে এনআরসি হবে না, যদিও তাঁর দল জেডিইউ সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পক্ষে রায় দিয়েছিল৷ কিন্তু আগের দিনই নীতিশ বিহারের সংখ্যালঘু মুসলিমদের আশ্বস্ত করেছিলেন, তাঁদের বাস্তুচ্যুত হতে হবে না৷
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, এবং হালে ওড়িশা, বিহারের মতো যেসব রাজ্য এনআরসি চালু করবে না বলছে, বা সিএএ-র বিরোধিতা করছে, তারা কি আইনত বাধ্য সংসদে অনুমোদিত কোনো কেন্দ্রীয় আইন কার্যকর করতে? আপাতদৃষ্টিতে তাই৷ কিন্তু অন্য আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা দেখছেন আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ৷ তাঁর বক্তব্য, নির্দিষ্ট কোনো আইনের কারণে যাঁদের উপকৃত হওয়ার কথা, এক্ষেত্রে হিন্দু শরণার্থীরা, আইনটি চালু না হলে যদি তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন৷ কিন্তু অন্য কোনো সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়া হলো, বা হলো না কেন, এ নিয়ে মামলা হতে পারে না৷
আর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য, বিতর্কিত সংশোধনীটি ভারতীয় সংবিধানের পরিপন্থী বলেই একের পর এক মামলা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে৷ এবার আদালত সিদ্ধান্ত নেবে৷ বস্তুত, ৫৯টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সিএএ-র বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে৷ ২২ জানুয়ারি সব কটি মামলার একসঙ্গে শুনানি হবে৷