রমাকে সহায়তার আহ্বান
১৮ জুলাই ২০১৩বাংলাদেশে চলতি সপ্তাহে মূল আলোচনার বিষয় মুক্তিযুদ্ধ৷ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে দু'জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছে ঢাকার ট্রাইব্যুনাল৷ এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে বাংলা ব্লগ, ফেসবুক, টুইটারে৷ এই আলোচনায় নতুন রসদ জুগিয়েছেন ছোট গল্প লেখক রেজা ঘটক৷
সামহয়্যার ইন ব্লগে রেজা লিখেছেন বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীকে নিয়ে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘চট্টগ্রাম শহরের রাস্তায় রাস্তায় খালি পায়ে হেঁটে নিজের লেখা বই ফেরি করেন রমা চৌধুরী৷ কে এই রমা চৌধুরী? বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীরাঙ্গনা৷ সারা দিনের আহার সংগ্রহের জন্য নিজের লেখা বই বিক্রি করতে পারলে তবেই আহার জোটে রমা চৌধুরীর৷''
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষণের শিকার হন রমা চৌধুরী৷ বিস্তারিত নিবন্ধে সে সময়ের কথাও লিখেছেন রেজা ঘটক৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘নিজের মা, পাঁচ বছর ৯ মাস বয়সি ছেলে সাগর ও তিন বছর বয়সি ছেলে টগরের সামনেই তাকে ধর্ষণ করে এক পাকিস্তানি খানসেনা৷ পাকসেনারা রমা চৌধুরীকে শুধু ধর্ষণেই ক্ষান্ত হয়নি, তাদের বাড়িও পুড়িয়ে দেয় তখন৷''
একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও রমা চৌধুরীর জীবনের ভোগান্তি শেষ হয়নি৷ একের পর এক প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে৷ সম্পদ হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন, হারিয়েছেন স্বামীকেও৷ মোটের উপর সমাজে তিনি পরিচিত ধর্ষিতা নারী হিসেবে৷ রেজা লিখেছেন, ‘‘জীবনের সব হারিয়ে রমা চৌধুরী এখন বইয়ের ফেরিওয়ালা৷ নিজের লেখা বই ফেরি করে বিক্রি করেন৷...যেদিন বই বিক্রি হয় সেদিন তিনি দুমুঠো খান৷''
সামহয়্যার ইন ব্লগে এই নিবন্ধ প্রকাশের পর রমার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন অনেকে৷ রেজা ঘটক সেই বিষয়ে আপডেটও দিয়েছেন৷ তবে তিনি চান স্থায়ী সমাধান৷ রেজা ঘটক লিখেছেন, ‘‘ প্রিয় ব্লগারদের উৎসাহ এবং আগ্রহকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না৷ আমরা রমা চৌধুরী'র জন্য স্থায়ী একটি সমাধান বের করতে সক্ষম হলেই আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগটি যথাযথ আলোর মুখ দেখবে বলেই আমি বিশ্বাস করি৷''
সংকলন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন