বুধবারই পদত্যাগের ঘোষণা করছেন টেরেসা মে?
২৭ মার্চ ২০১৯সরকার না সংসদ – ব্রিটেনে কোন পক্ষ ব্রেক্সিটের রাশ হাতে রাখতে পারবে বুধবারই তা স্থির হতে পারে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজের পদত্যাগের প্রস্তাব সামনে রেখে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের চেষ্টা চালাতে পারেন৷ সোমবারই ব্রিটিশ সংসদ সরকারকে উপেক্ষা করে এমন একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, যার মাধ্যমে ব্রেক্সিট চুক্তির বিভিন্ন বিকল্পের পক্ষে ঐকমত্য পরীক্ষা করা যেতে পারে৷ অর্থাৎ সরকারের সীমিত নীতির বাইরে দ্বিতীয় গণভোট, শুল্ক ইউনিয়নে যোগদানসহ কোনো একটি সমাধানসূত্রের পক্ষে সংসদ সদস্যরা রায় দিতে পারেন৷ বুধবারই তাঁরা সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চলেছেন৷ বুধবারই ব্রেক্সিটের কোনো একটি বিকল্পের পক্ষে ব্রিটিশ সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ৷ আগামী সোমবার দ্বিতীয় পর্যায়ে কোনো একটি বিকল্পকে ঘিরে ঐকমত্য উঠে আসতে পারে৷ ‘সফট ব্রেক্সিট' – অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখার কোনো একটি মডেল সংসদের সমর্থন পেতে পারে৷
প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এমন কোনো বিকল্পের ঘোর বিরোধী৷ তিনি সংসদের রায় কার্যকর করার কোনো আশ্বাস দেননি৷ ফলে সংসদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত অনিবার্য৷ কিন্তু মন্ত্রিসভা, সরকার ও দলের উপর তাঁর কর্তৃত্ব ধীরে ধীরে আরও দুর্বল হয়ে ওঠায় ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ কমে চলেছে৷ শেষ চেষ্টা হিসেবে তিনি বুধবার টোরি দলের প্রভাবশালী ১৯২২ কমিটির সামনে ভাষণ দিতে চলেছেন৷ সেই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তিনি নিজের পদত্যাগের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ তার পূর্বশর্ত হিসেবে তিনি ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে দলের সমর্থন চাইতে পারেন৷ সেই পরিকল্পনা বিফল হলে মন্ত্রিসভার বেশ কিছু সদস্য পদত্যাগ করতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছে৷
ক্ষমতাসীন টোরি দলের কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদের একটা বড় অংশ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে নিতে পারেন, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ সংসদ নিজস্ব উদ্যোগে ‘সফট ব্রেক্সিট' বা গণভোটের মতো পথে অগ্রসর হলে ও প্রধানমন্ত্রীর পদে নতুন নেতা উঠে এলে গোটা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে বলে তাঁদের মনে আশঙ্কা রয়েছে৷ সে ক্ষেত্রে নিমরাজি হয়ে তাঁরা ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করে ঠিক সময়ে ইইউ থেকে বিচ্ছেদ নিশ্চিত করতে চাইছেন৷ তবে দলের সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়ে টেরেসা মে ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ বুধবার প্রয়োজনীয় আশ্বাস আদায় করতে পারলে তিনি বৃহস্পতিবার তৃতীয়বারের মতো ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের চেষ্টা চালাতে পারেন৷
ব্রিটিশ রাজনীতির এই জটিল পরিস্থিতির মুখে ইইউ চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতি জোরদার করছে৷ ব্রিটেনে কোনোরকম ঐকমত্য সম্ভব না হলে আগামী ১২ই এপ্রিল সেই আশঙ্কা বাস্তব হতে পারে৷ সংসদ বা সরকারের উদ্যোগে কোনো একটি বিকল্প অনুমোদন পেলে অবশ্য অরাজকতা এড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে ব্রেক্সিটের সময়সীমা স্থির করা যেতে পারে৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)