বুশরার জামিন চান না ফারদিনের বাবা
৫ জানুয়ারি ২০২৩বৃহস্পতিবার মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে এ শুনানি হওয়ার কথা৷ পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গত ১৬ নভেম্বর বুশরার জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছিল আদালত৷ ৫ ডিসেম্বর হাকিম আদালতে বুশরার জামিন আবেদন আবারও খারিজ হলে তিনি জজ আদালতে আবেদন করেন৷
ফারদিন নূর পরশের বাবা নুর উদ্দিন রানা ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হীরন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন৷ তিনি আমার পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করবেন৷”
মামলার তদন্তকারী সংস্থাটি গোয়েন্দা পুলিশ ইতোমধ্যে জানিয়েছে, ফারদিন খুন হননি, আত্মহত্যা করেছিলেন৷ আর তার মৃত্যুর সঙ্গে বুশরার কোনো ‘সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি'৷ সুতরাং আদালতে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে৷
এ বিষয়ে ফারদিনের বাবার ভাষ্য, ‘‘আমি তদন্ত কর্তৃপক্ষের আত্মহত্যার ভাষ্য মানছি না৷ সুতরাং বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বুশরা জামিন পাক তা চাই না৷
‘‘সে দোষী না হলে অবশ্যই মামলায় শুধু জামিন নয়, অব্যাহতি পাবে৷ আমি তখন নিজেই তাকে যেন জামিন দেওয়া হয়, এটা আদালতে দঁড়িয়ে বলব; কিন্তু এখন নয়৷ আমাকে তদন্ত কতৃর্পক্ষ বলেছে আগামী ১৫ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে৷”
২৪ বছর বয়সি ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদকও ছিলেন ফারদিন৷
আর তার বন্ধু আমাতুল্লাহ বুশরা পড়েন ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় মেসে থাকতেন তিনি৷
বছর পাঁচেক আগে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ফারদিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় বলে ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা জানিয়েছিলেন৷
গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার পর ৭ নভেম্বর বিকালে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করেছিল নৌ-পুলিশ৷ আর ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার আগে তাকে সর্বশেষ রামপুরা এলাকায় বুশরার সঙ্গে দেখা গিয়েছিল৷ সে কারণে রামপুরা থানাতেই একটি জিডি করেছিলেন ফারদিনের বাবা৷
ছেলের লাশ পাওয়ার দুদিন পর ১০ ডিসেম্বর ভোরে তিনি রামপুরা থানাতেই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, সেখানে বুশরাকেই একমাত্র আসামি করা হয়৷
পরে ওইদিনই বুশরাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নেওয়া হলে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছিল আদালত৷ রিমান্ড শেষে আবারও তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আতাউল্লাহ তাকে কারাগারে রাখার আদেশ দেন৷
শীতলক্ষ্যা থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধারের ৪০ দিন পর গত ১৪ ডিসেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব উভয়ের তরফেই সাংবাদিকদের জানানো হয়, এই তরুণ সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন৷ তারপর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেনি তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ৷
ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ গত ৩০ ডিসেম্বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, ভিসেরা প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পারছেন না তারা৷
নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান অবশ্য বলেছিলেন, ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদন তারা ডিবির কাছে জমা দিয়েছেন৷ ভিসেরা প্রতিবেদনে কোনো রাসায়নিক বা বিষাক্ত কিছু পাওয়া যায়নি৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)