বেশি ক্ষুধার্ত মানুষ যে ১০ দেশে
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবারের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক প্রকাশ করেছে৷ সেখানে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম৷ কোন কোন দেশে বেশি ক্ষুধার্ত মানুষ বাস করছে দেখুন ছবিঘরে৷
কীভাবে এই সূচক?
অপুষ্টির হার এবং পাঁচ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে কম ওজন, কম উচ্চতা ও মৃত্যুর হার বিবেচনায় নিয়ে ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে প্রতিটি দেশের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স করা হয়েছে৷ এই সূচকে সবচেয়ে ভালো স্কোর হল শূন্য৷ স্কোর বাড়লে বুঝতে হবে, ক্ষুধার সূচকে সেই দেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে৷ আর স্কোর কমা মানে, সেই দেশের খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র (৫৩.৬)
এখানকার ৬৩ শতাংশ মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন৷ ২০১২ সাল থেকে জাতিগত সহিংসতা আর সংঘাতে এখানকার খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে৷ একশর মধ্যে ৫৩.৬ স্কোর পেয়ে ক্ষুধার রাজ্যে এদের পরিস্থিতি সবথেকে বেশি খারাপ৷
ইয়েমেন (৪৫.৯)
সংঘাতে জর্জরিত দেশটিতে মানবিক সংকট চলছে৷ দিন দিন খাদ্য নিরাপত্তহীনতা বেড়েই চলছে৷ দেশটির ১০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধায় কষ্ট করেন আর শিশুসহ প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ চরম অপুষ্টিতে ভুগছেন৷
চাদ (৪২.২)
ক্রমাগত খরা আর প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটির মানুষ খাবার সংকটে পড়েন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব দেশটিতে মারত্মকভাবে নানান প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে৷
মাদাগাস্কার (৪১.৫)
দেশটিতে বছরে গড়ে দেড়টি করে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে৷ এছাড়া তীব্র খরার সঙ্গে প্রকট বন্যা দেশটির অর্ধেক অঞ্চলকে গ্রাস করে৷ জাতিসংঘের ধারণা, দেশটির সাত লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তহীনতায় রয়েছে৷
জাম্বিয়া (৩৮.১)
দেশটির বেশিরভাগ কৃষক ফসল উৎপাদনে বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এখানকার ফসল উৎপাদন মারত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে৷ বৃষ্টি, বন্যা আর জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷
লাইবেরিয়া (৩৪.৯)
গত দুই বছরে চলমান বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে৷ এই দেশের ১.৮ মিলিয়ন মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন, আর ২.৯ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন৷
হাইতি (৩৪.৭)
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেশি৷ ২০১০ সালের ভূমিকম্প এবং হারিকেন ম্যাথিউর চলমান প্রভাবসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধ্বংসাত্মক সংমিশ্রণে ভুগছে দ্বীপ দেশটি৷
পূর্ব তিমুর (৩৪.৫)
ছোট এই দ্বীপ দেশটি এশিয়ার মধ্যে অন্যতম দরিদ্র৷ এই দেশের ১.২ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ দীর্ঘস্থায়ী খাদ্য নিরাপত্তাহনীতায় ভুগছেন৷
জিম্বাবুয়ে (৩৪.৪)
চলমান খরা আর কয়েকটি প্রদেশে ঘূর্ণঝড়ের বিরূপ প্রভাবে দেশটিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আরো বাড়ছে৷ খরা, ঘুর্ণিঝড় আর বন্যায় দেশটিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়৷ দেশটির ৩.৬ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে৷
আফগানিস্তান (৩৩.৮)
কয়েক দশকের মধ্যে সম্প্রতি ভয়ঙ্কর খরার মুখে পড়ে দেশটি৷ গতবার প্রবল বৃষ্টি এবং তুষারপাত হওয়ায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়৷ দেশটির পাঁচ মিলিয়ন অর্থাৎ, ১৪ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে৷
বাংলাদেশের অবস্থান (২৫.৮)
১১৭টি দেশের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম৷ ২০১৮, ২০১৭ ও ২০১৬ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৮৬, ৮৮ ও ৯০ নম্বরে৷ এবার বৈশ্বিক অবস্থানে বাংলাদেশের দুই ধাপ পেছানোর কারণ হলো অন্য দেশের দ্রুত গতিতে উন্নতি৷
এসআই/কেএম (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ডট অর্গ, কনসার্ন ইউএসএ ডট অর্গ)