বোকো হারামের সঙ্গে আলোচনা
১৪ মে ২০১৪দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বোর্নো রাজ্যের গভর্নর কাশিম শেট্টিমা জানান, বোকো হারামের পাঠানো ভিডিওতে যে মেয়েদের দেখা গেছে, তারা সবাই চিবোক এলাকার একটি স্কুলের ছাত্রী, যেখানে গত মাসে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল৷
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে চিবোকসহ আশেপাশের দুটি রাজ্যে আরো ছয় মাস জরুরি অবস্থা জারি রাখা হতে পারে বলে প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন ইতোমধ্যে জানিয়েছেন৷
নাইজেরিয়ার প্রভাবশালী মন্ত্রী টানিমু টুরাকি সরকারের অবস্থান জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, গত পাঁচ বছর ধরে চলে আসা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থামাতে বোকো হারামের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তাঁরা প্রস্তুত আছেন৷
‘‘আমরা যে কোনো ইস্যুতে কথা বলতে রাজি আছি৷ চবোকের স্কুলছাত্রীদের বিষয়েও আমরা আলোচনায় প্রস্তুত৷''
বোকো হারামের নেতা আবু বকর শেকাউ এর আগে বলেছিলেন, তাদের যে সদস্যরা সরকারের হাতে বন্দি, তাদের মুক্তি দিলে অপহৃত স্কুলছাত্রীদেরও ছেড়ে দেয়া হবে – নাইজেরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে ওই শর্ত নাকচ করে দিলেও একদিনের মাথায় আলোচনায় রাজি থাকার কথা বললেন টানিমু টুরাকি৷
বোকো হারামের জঙ্গিরা গত ১৪ এপ্রিল রাজধানী আবুজায় বোমা হামলা চালায়, যাতে অন্তত ৭৫ জন নিহত হন৷ এর কয়েক ঘণ্টা পরেই চিবোকের সেই স্কুল থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয় ২৭৬ জন স্কুলছাত্রীকে, যাদের মধ্য ২২৩ জনকে এখনো আটকে রেখেছে তাঁরা৷
চলতি মাসের শুরুতে ৫৭ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে ওই ২৭৬ ছাত্রীকে অপহরণের কথা স্বীকার করেন ইসলামি দলটির নেতা আবু বকর শেকাউ৷ তিনি হুমকি দেন, নাইজেরিয়ায় পশ্চিমা শিক্ষা বন্ধ করা না হলে ‘আল্লাহর ওয়াস্তে' ওই স্কুলছাত্রীদের বাজারে বিক্রি করে দেয়া হবে৷
এরপর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ আর নিন্দার মধ্যে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে আকাশ থেকে তল্লাশি শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র৷ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইসরায়েলও কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে নাইজেরিয়ায় পাঠিয়েছে জিম্মি উদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য৷ সহায়তার আগ্রহ দেখিয়েছে চীন সরকারও৷
অপহৃত স্কুলছাত্রীদের কীভাবে উদ্ধার করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর আফ্রিকা কমান্ডের প্রধান জেনারেল ডেভিড রডরিগেজ ইতোমধ্যে আবুজায় পৌঁছেছেন৷ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার আইভান জোনসও জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে নাইজেরিয়ার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন৷ তবে স্কুলছাত্রীদের উদ্ধারের কাজটি সহজ হবে না বলেই তিনি মনে করেন৷
পশ্চিমা শিক্ষার বিরোধী বোকো হারাম গত পাঁচ বছর ধরেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আসছে৷ তবে একসঙ্গে এত ছাত্রীকে অপহরণ এই প্রথম৷ সংগঠনটির জঙ্গি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর তাদের হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷
জেকে/ডিজি (এএফপি, এপি)