1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যঙ্গাত্মক রচনা

মার্কো ম্যুলার/ডিজি৮ জানুয়ারি ২০১৫

টিম ভুল্ফ জার্মানির অন্যতম স্যাটায়ার পত্রিকা ‘টিটানিক'-এর প্রধান সম্পাদক৷ ব্যঙ্গ-পত্রিকা ‘শার্লি এব্দো'-র কার্যালয়ে সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনায় তিনি ক্ষুব্ধ, বিস্মিত৷ তিনি এর প্রতিবাদ করতে চান আরো ব্যঙ্গ রচনার মধ্য দিয়েই৷

https://p.dw.com/p/1EGbC
Frankreich Anschlag auf Charlie Hebdo - Trauer in Nantes 07.01.2015
ছবি: picture-alliance/abaca/G. Durand

ব্যঙ্গাত্মক রচনার একটি নিজস্ব শৈলী আছে৷ আর সেটা বিশ্বের অন্যান্য সংস্কৃতির মতো বাঙালি সংস্কৃতিতেও ছিল এবং কোথাও কোথাও এখনও আছে৷ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে নির্মলেন্দু গুণ অথবা হুমায়ূন আহমেদ – বাঙালিকে স্যাটায়ারের স্বাদ বহু কবি, ঔপ্যনাসিক, সাহিত্যিকরা দিয়েছেন৷ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার ‘স্যাটায়ার কার্টুন' একসময় পাঠককে মাতিয়ে রেখেছে, মুগ্ধ করেছে৷ আবার কখনও কার্টুনই হয়ে উঠেছে দাঙ্গা, বিক্ষোভ এবং সন্ত্রাসবাদের কারণ৷ প্যারিসের ‘শার্লি এব্দো'-র কার্যালয়ে হামলা তারই সাম্প্রতিকতম উদাহরণ৷

জার্মানিতে রয়েছে ব্যঙ্গাত্মক রচনার একটা ইতিহাস৷ তাই ডয়চে ভেলে মুখোমুখি হয়েছে জার্মানির অন্যতম স্যাটায়ার পত্রিকা ‘টিটানিক', অর্থাৎ ‘টাইট্যানিক'-এর প্রধান সম্পাদক টিম ভুল্ফের৷

ডয়চে ভেলে: ফরাসি সাপ্তাহিক ‘শার্লি এব্দো' ইসলামকে ব্যঙ্গ করেছে৷ এর আগে বহুবার পত্রিকাটি হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ছেপেছে এবং সেজন্য একাধিকবার হুমকির মুখে পড়েছে ৷ ২০১১ সালে তো পত্রিকা অফিসে বোমাও ছোঁড়া হয়েছিল, ঠিক এবারের ঘটনার মতো – আল্লাহ-র নামেই৷ জার্মানির অন্যতম স্যাটায়ার পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে আপনার কি কর্মচারীদের জন্য বা আপনার নিজের জীবন নিয়ে ভয় করছে?

টিম ভুল্ফ: না, এখনও পর্যন্ত আমি ভয়ের কিছু দেখছি না৷ তবে আক্রমণকারীরা আসলেই ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছিল কিনা – সে ব্যাপারেও আমি নিশ্চিত নই৷ আল্লাহ-র নাম নিয়ে সন্ত্রাস করলেই যে সন্ত্রাসী মুসলমান হবে, তার কোনো অর্থ নেই৷ আর তারা যদি মুসলমানও হয়, জার্মানির ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই কিন্তু ব্যঙ্গাত্মক রচনা বেশ ভালোই উপভোগ করেন৷

Chefredakteur des Satiremagazins Titanic Tim Wolff
টিম ভুল্ফ জার্মানির অন্যতম স্যাটায়ার পত্রিকা ‘টিটানিক'-এর প্রধান সম্পাদক৷ছবি: picture alliance/B. Kammerer

তার মানে ‘টিটানিক'-এর অফিসে ফ্রান্সের এ ঘটনার পর নিরাপত্তা বা কর্মী-সুরক্ষার ব্যাপারে কোনো বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না?

না৷ জার্মানিতে এরকম কোনো সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা এ মুহূর্তে নেই৷ আর সে কারণেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কোনো প্রশ্নই উঠছে না৷

প্যারিসের ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকা ‘শার্লি এব্দো'-র কর্মীদের কি আপনি চিনতেন৷ তাঁদের সঙ্গে কি আপনার যোগাযোগ হয়েছে?

না, ব্যক্তিগতভাবে আমি কাউকে চিনি না৷ তবে তাঁদের কাজ, কর্মধারা সম্পর্কে আমরা অবহিত এবং মোটের ওপর তাঁদের কাজ আমরা পছন্দই করি৷

কত ঘন ঘন পত্রিকাটি ইসলামকে বা হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করে কার্টুন প্রকাশ করেছে?

সেটা নির্ভর করেছে ঘটনার ওপর৷ যেমন সাম্প্রতিক সময়ে বহুবার তারা ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএস-এর ওপর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করেছে৷ আর এবারের এই আক্রমণের পর, আমি নিশ্চিত যে, তারা আবারো ইসলামকে ব্যঙ্গ করে কার্টুন ছাপবে৷ কারণ, জোর করে সন্ত্রাসের সাহায্যে স্যাটায়ারকে বন্ধ যায় না, বাকস্বাধীনতাকে রুদ্ধ করা যায় না৷ এর ফলে আরো নতুন নতুন ব্যঙ্গাত্মক রচনার খোরাক মিলবে৷

অর্থাৎ, আপনি বা আপনারা ইসলামকে ব্যঙ্গ করা না এড়িয়ে বরং বলবেন – এখনই এর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন?

হ্যাঁ, অবশ্যই৷ ব্যঙ্গাত্মক রচনা বা স্যাটায়ার হলো মানবাধিকার, একটি মৌলিক অধিকার৷ প্রতিটি মানুষের এই অধিকার আছে৷ কয়েকজন অপদার্থ, বোধ-বুদ্ধিহীন মানুষের কারণে এটা নিষিদ্ধ হতে পারে না৷ আমাদের মুখ, আমাদের লেখনি কেউ বন্ধ করতে পারবে না৷