ব্রাজিলে সামাজিক দূরত্ব মানছেন না খোদ প্রেসিডেন্ট
১৮ মে ২০২০করোনা সংক্রমণের নিরিখে ইটালিকেও পিছনে ফেলে দিল ব্রাজিল। সোমবার সকাল পর্যন্ত সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৪১ হাজার। ইটালিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ২৫ হাজার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, করোনা সংক্রমণ এ ভাবে ছড়িয়ে পড়লেও এখনও কার্যত বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না দেশের প্রেসিডেন্ট। রোববারও তার আভাস মিলেছে। এ দিন প্রেসিডেন্টের প্যালেসের সামনে কিছু আন্দোলনকারী জমা হয়েছিলেন। এক সময় প্রেসিডেন্ট বলসোনারোও তাঁদের কাছে পৌঁছে যান। কথা বলেন। সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে সেলফি তোলেন। তাঁর বক্তব্য, আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের সঙ্গে তিনি এক মত। সে জন্যই তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর মতে, গণতন্ত্র আগে রক্ষা করতে হবে, তারপর অন্য সব কিছু। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাকে প্রাথমিক ভাবে পাত্তা দেওয়া হয়নি বলেই আজ ব্রাজিলের এই অবস্থা। রোববারেও হাজারের উপর মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ব্রাজিলে। মৃত্যু হয়েছে পাঁচশ জনেরও বেশি লোকের। এই পরিস্থিতিতে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট যদি সামাজিক দূরত্ব না মানেন, তাহলে সমস্যা আরও বাড়বে।
এ দিকে অ্যামেরিকা আগেই জানিয়েছিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মনোনীত করোনা টেস্ট কিট তারা ব্যবহার করবে না। নিজেদের স্বাস্থ্য সংস্থার তৈরি টেস্ট কিট এত দিন ব্যবহার করা হচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সেই টেস্ট কিটে প্রচুর ভুল আছে। ফলে পরীক্ষার ফলাফলেও ভুল তথ্য মিলেছে। বিষয়টি নিয়ে দেশের স্বাস্থ্য সংস্থাকে তীব্র আক্রমণ করেছে হোয়াইট হাউস। বলা হয়েছে, তারা দেশের সম্মানহানি ঘটিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু হয়েছে। খুলছে স্কুল-কলেজ, বার-রেস্তোরাঁ। তারই মধ্যে দেশের বেশ কিছু অর্থনীতিবিদকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল সরকার। প্রশ্ন করা হয়েছিল, অর্থনীতিবিদরা সামাজিক দূরত্বের নিয়ম চালু রাখা পক্ষে কি না। অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, তাঁরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পক্ষে। অর্থাৎ, সব কিছু চালু হলেও আগের মতো হবে না। সর্বত্রই সামাজিক দূরত্বের নিয়ম জারি রাখা হবে। লকডাউনের পরে অস্ট্রেলিয়ার স্কুলগুলিতেও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম চালু করা হয়েছে। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ছাত্রদের আলাদা আলাদা দলে ভাগ করে স্কুলে যেতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, আগের মতো সকলকে নিয়ে এক সঙ্গে ক্লাস আপাতত হবে না।
জার্মানিতেও জীবনযাপন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। আগামী ১৫ জুন থেকে সীমান্তও খুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে ইটালি এবং স্পেনে। গত কয়েক মাসের মধ্যে এই প্রথম স্পেনে এক দিনে মৃতের সংখ্যা একশ-র নীচে নেমেছে। ইটালিতেও আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা অনেকটা কমেছে।
এ দিকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতি সংঘের সেক্রেটারি জেনারেল। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি ৩০৮ জন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে ভাসান চরে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জাতি সংঘের সেক্রেটারি জেনারেল তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ''যে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের কিছু দিন আগে জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, আইসোলেশনে রাখার জন্য তাঁদের আপাতত ভাসান চরে রাখা হয়েছে। আশা করবো, দ্রুত তাঁদের মূল উদ্বাস্তু শিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সব রকম সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।''
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)