ইইউকে সমঝোতার আহ্বান জানালেন মে
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮আগামী নভেম্বরে ব্রেক্সিট নিয়ে শীর্ষ বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা৷
ইইউ নেতারা এক অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার সালসবুর্গে দ্বিতীয় দিনের মতো মিলিত হয়েছিলেন৷ তাঁদের আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল ব্রেক্সিট সমঝোতা আলোচনার অচলাবস্থা৷ এ বিষয়ে অক্টোবরেই চূড়ান্ত চুক্তি সই হওয়ার কথা৷
এদিকে বৃহস্পতিবারই ইইউ নেতারা নভেম্বরে ব্রেক্সিট নিয়ে একটি বিশেষ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন৷
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুয়র্ৎসের মতে, ব্রেক্সিট আলোচনায় অভিবাসন বিষয়ক মতবিরোধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন জোটের নেতারা৷
এর আগে বুধবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ইইউ নেতাদের বলেছেন, ব্রিটেন ‘গুরুত্বপূর্ণ ও যা নিয়ে কাজ করা যায় এমন প্রস্তাবনা' তুলে ধরেছে এবং এটাতে সাড়া দেওয়া ও এর ওপর ভিত্তি করে নিজেদের অবস্থান এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ইইউ নেতাদের উপর নির্ভর করছে৷
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলেও আইরিশ সীমান্ত ও ব্রেক্সিটোত্তর বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে মতভেদ রয়েছে৷
‘‘যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবগুলোয় আরো কাজ করা দরকার৷’’
বিষয়টি নিয়ে শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারার ঝুঁকি এখনো রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
আগামী ১৮ অক্টোবরের বৈঠককেই ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানোর শেষ সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ ব্রেক্সিট চুক্তি হয়ে গেলে আগামী বছর ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে৷ চুক্তি হলে তা বাস্তবায়নের আগে ইইউ পার্লামেন্টের পাশাপাশি সব সদস্য দেশের পার্লামেন্ট ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তার অনুসমর্থন হতে হবে৷
তবে ইইউ নেতারা বৃহস্পিতবার নভেম্বরের ওই বৈঠকের ঘোষণা দেওয়ায় এখন ওই দিনকেই একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা বিবেচনা করা হচ্ছে৷
ব্রেক্সিট নিয়ে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় হচ্ছে- যুক্তরাজ্যের অংশ হয়ে থাকা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্পর্ক কেমন হবে৷
অভিবাসন
গত জুনে যৌথ বৈঠকে অভিবাসন নিয়ে চুক্তি হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় চাপে আছেন ইইউ নেতারা৷
অধিকাংশ দেশই সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফ্রন্টেক্সকে শক্তিশালী করার বিষয়ে একমত হলেও আনুপাতিক হারে শরণার্থী পুনর্বণ্টনের প্রস্তাব নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে৷
পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও হাঙ্গেরির মতো দেশগুলো এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থানে অনড় রয়েছে৷
এছাড়া বিপজ্জনক সমুদ্র পথে ইউরোপে অভিবাসী পাঠানোর চেষ্টা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভরসা করা যায় কিনা তা নিয়েও জোট নেতাদের মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে৷ অবশ্য এ বিষয়ে মিশরের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে অনেক দেশ৷
সদস্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে এ বিষয়ে ‘ব্লেম গেম’ খেলার অভিযোগ তুলে সংকট সমাধানে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতেই সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক৷
এএইচ/এসিবি (এএফপি/ডিপিএ)