1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রেক্সিটের পথে অগ্রগতি

১৫ নভেম্বর ২০১৮

ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়ার পক্ষে মন্ত্রিসভার সমর্থন পেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ ফলে ইইউ শীর্ষ সম্মেলন ডেকে চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ শুরু হচ্ছে৷ তবে গোটা প্রক্রিয়াকে ঘিরে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/38HGO
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে
ছবি: Reuters/T. Melville

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া প্রথম বাধা অতিক্রম করলো৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বুধবার প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে আলাপ-আলোচনার পর নিজের মন্ত্রিসভার সম্মতি আদায় করতে পেরেছেন৷ তবে সেই ঐক্য কতদিন অটুট থাকবে, তা স্পষ্ট নয়৷ অতীতেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর ‘চেকার্স প্ল্যান' বা ব্রেক্সিট নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েও কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছিলেন৷

বৃহস্পতিবার সকালেই ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডমিনিক রাব পদত্যাগ করেছেন৷ অন্য কোনো মন্ত্রী সেই পথ বেছে নেবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷

৫৮৫ পাতার এই চুক্তির খসড়ার মূলমন্ত্র হলো তথাকথিত ‘ব্যাকস্টপ' সংক্রান্ত বোঝাপড়া৷ ২০১৯ সালের ২৯শে মার্চ ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পর আচমকা অচলাবস্থা এড়াতে ২১ মাস পর্যন্ত এক অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার প্রস্তাব আগেই রাখা হয়েছিল৷ এই সময়কালে ব্রিটেন ইইউ-র সদস্য দেশ ইইউ-র শুল্ক এলাকার মধ্যে থাকতে পারবে৷ এভাবে উত্তর আয়ারল্যান্ড সীমান্তে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না৷ যে কোনো সদস্য দেশের মতো ব্রিটেন বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করবে৷ বর্তমান বোঝাপড়া অনুযায়ী এই সময়কালে স্থায়ী ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না হলে প্রয়োজনে সেই মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব৷

এমন ব্যবস্থার আওতায় অরাজকতা এড়ানো সম্ভব হলেও কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা এর ঘোর বিরোধী৷ তাদের যুক্তি, বিচ্ছেদের পরেও ব্রিটেনকে ইইউ-র সব বিধিনিয়ম মেনে চলতে হবে৷ অথচ কোনো সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার অধিকার থাকবে না৷ সেইসঙ্গে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে না৷ ‘ব্যাকস্টপ' ব্যবস্থার ফলে সেই অবস্থা আরো দীর্ঘ সময়ের জন্য চালু থাকতে পারে৷ উত্তর আয়ারল্যান্ডের জোটসঙ্গী দল ও স্কটল্যান্ডের আঞ্চলিক দলও এমন বোঝাপড়ার বিরোধিতা করছে৷ বিরোধী লেবার দলও প্রধানমন্ত্রীকে এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে প্রস্তুত নয়৷ ব্রেক্সিট চুক্তি সংক্রান্ত গণভোটের পক্ষেও সমর্থন বাড়ছে৷

বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে টেরেসা মে তাঁর ‘সাফল্য' তুলে ধরার পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার বলেন, দুই পক্ষই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হাসিল করেছে৷ তিনি ইইউ সদস্য দেশগুলির উদ্দেশ্যে ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষরের আহ্বান জানান৷ ইইউ চুক্তির খসড়া ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে৷ এবার ২৫শে নভেম্বর এক বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন ডেকে নেতারা ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষর করবেন৷

প্রাথমিক অগ্রগতি সত্ত্বেও অনেক বিষয় নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্নে দলের সমর্থন ও সেইসঙ্গে নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে পারবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ সংসদের অনুমোদনের কোনো নিশ্চয়তাও এখনো পাওয়া যাচ্ছে না৷ টেরেসা মে এই সব বাধা দূর করতে না পারলে ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর করা সম্ভব হবে না৷

প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে-র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত টানাপড়েনে ইইউ কার্যত নিজের অবস্থানে অটল থাকতে পেরেছে৷ ব্রিটেনের সংসদ শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করলে ইইউ-র সব দেশকেও সেই চুক্তি অনুমোদন করতে হবে৷ তবে এ ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ সমর্থনই যথেষ্ট৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টকেও চুক্তি অনুমোদন থাকতে হবে৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)