ব্লগার অভিজিতের খুনিদের সন্ধান দিলে মিলিয়ন ডলার পুরস্কার
২০ ডিসেম্বর ২০২১যুক্তরাষ্ট্রের ‘রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস’ প্রোগ্রামের আওতায় অভিজিৎ রায়ের খুনিদের সম্পর্কে তথ্য পেতে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে৷ এই প্রথম বাংলাদেশে সংগঠিত কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের তথ্য পেতে এরকম উদ্যোগ নিলো পশ্চিমা দেশটি৷
স্টেট ডিপার্টমেন্টেরর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসার সময় আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীরা মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়কে হত্যা করে এবং তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদকে আহত করে৷’’
‘‘বাংলাদেশের একটি আদালতে ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়েছে উক্ত হামলায় তাদের ভূমিকার জন্য৷ এই আসামীদের মধ্যে দু'জন সৈয়দ জিয়াউল হক (ওরফে মেজর জিয়া) এবং আকরাম হোসেনের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিল এবং তারা এখনও পলাতক রয়েছেন,’’ উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে৷
এতে আরো লেখা হয়েছে, ‘‘হক, হোসেন বা হামলার সাথে জড়িত অন্য কারো সম্পর্কে আপনার নিকট কোনো তথ্য থাকলে, নিচের নম্বরটি ব্যবহার করে সিগন্যাল, টেলিগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আপনার তথ্য আমাদের নিকট প্রেরণ করুন৷ সেক্ষেত্রে আপনিও পুরস্কার পেতে পারেন৷’’
খুনিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে ইংরেজিতে +১-২০২-৭০২-৭৮৪৩ নম্বরটি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ রুখতে ১৯৮৪ সালে ‘রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট৷ এর আওতায় সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে তথ্য পেতে নানা অংকের অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়৷ এখন অবধি এভাবে একশর বেশি মানুষের তথ্য পেতে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি খরচ করেছে দেশটি৷
অভিজিৎ রায়ের হত্যা মামলায় চলতি বছরের শুরুর দিকে জঙ্গি নেতা জিয়াউল হক জিয়াসহ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের' পাঁচ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড এবং উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার আদালত৷ তবে তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদ, যিনি সেই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন, এই বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷
তিনি বলেন, ‘‘মামলার তদন্তকারীদের কেউ গত ছয় বছরে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি অথচ আমিই এই হামলার প্রত্যক্ষদর্শী এবং এতে ক্ষতিগ্রস্ত৷’’
হামলার দুই আসামি সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া এবং আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার না হওয়া নিয়েও তখন প্রশ্ন তোলেন বন্যা৷ সোমবার এই দু'জনসহ বাকিদের সম্পর্কে তথ্য পেতে পুরস্কারের ঘোষণা দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷
উল্লেখ্য, পদার্থবিদ অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ রায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাসিন্দা, বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখি ছাড়াও তিনি মুক্তমনা ব্লগ সাইট চালাতেন৷ প্রচলিত বিভিন্ন বিষয়কে বিজ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ করা সাইটটি ২০১৫ সালে ডয়চে ভেলের ‘দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ড’ জয় করে৷