1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভবিষ্যতে ঘরের ভিতরেই আলো ছড়াবে ওএলইডি

৬ জুন ২০১১

উন্নত দেশগুলোতে দিন দিন বাড়ছে এলইডি লাইটের ব্যবহার৷ তবে বিজ্ঞান এখন আরও এগিয়ে গিয়েছে৷ সেজন্য অর্গানিক এলইডিও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে৷ জার্মানির বিজ্ঞানীরা চাচ্ছেন এই ওএলইডি-কে প্রাত্যহিক জীবনের অংশ করে তুলতে৷

https://p.dw.com/p/11UxV
রাস্তায় বড় পর্দার টেলিভিশনগুলোও এই এলইডির অবদানছবি: DW-TV

সাধারণ যে প্রযুক্তিতে ঘরের আলো জ্বলে, ইলেকট্রনিক সামগ্রীর আলো সেই প্রযুক্তির নয়৷ সেখানে জায়গা করে নিয়েছে লাইট এমিটিং ডায়োড বা এলইডি৷ হাতের মোবাইল ফোনটির বাটন টিপলেন, কম্পিউটারটি চালু করলেন, কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখলেন সব জায়গাই আলোকিত করে রেখেছে এই এলইডি৷ রাস্তায় যে বড় পর্দার টেলিভিশনগুলো দেখছেন, সেগুলোও এই এলইডির অবদান৷ ছোট আকারের একটি এলইডি পার্টিকেল সাতটি পর্যন্ত রং প্রদর্শন করতে পারে এবং এই এলইডির জন্য খুব অল্প বিদ্যুৎ শক্তিরই প্রয়োজন হয়৷ এর থেকে কোন ধরণের তাপ বিকিরণ হয় না৷

ইউরোপের দেশগুলো ইদানিং বিদ্যুৎ শক্তি সাশ্রয়ের জন্য নানা উদ্যোগ নিচ্ছে৷ জার্মানিতে আগামী কয়েক বছর পর বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব ছাড়া অন্য কোন বাল্ব ব্যবহার করা হবে না৷ তাই ভবিষ্যতে এলইডি হয়ে উঠবে অন্যতম প্রয়োজনীয় বস্তু৷ এই এলইডিকে আরও সহজলভ্য করে তুলতে গবেষণা করছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷ তারা অর্গানিক এলইডির ওপর জোর দিচ্ছেন৷ প্রাকৃতিক বস্তুসামগ্রী থেকেই তারা তৈরি করছেন ওএলইডি লাইট৷

Lighting designer Ingo Maurer poses for a portrait with his hanging lamp "Flying Future" Wednesday, May 21, 2008 in New York. Maurer is the first to use organic LEDs (OLEDs) from OSRAM in a functional table light. (AP Photo/Mary Altaffer)
লাইট ডিজাইনার ইঙ্গো তার ঝুল্ন্ত লাইটের সঙ্গেছবি: AP

ওএলইডি হচ্ছে প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি এলইডি লাইট৷ অত্যন্ত পাতলা কাচের মত এই ওএলইডির মধ্যে যখন বিদ্যুৎ প্রবাহিত করা হয় তখন সেই এলইডির ইলেকট্রনগুলো প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর সহায়তায় জ্বলে ওঠে৷ ফলে আলো বিচ্ছুরিত হতে শুরু করে সেই পাতলা কাচ থেকে৷

জার্মানির ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানী কার্ল লিও গত ১০ বছর ধরে এই এলইডি নিয়ে কাজ করছেন৷ কয়েকটি ওএলইডি হাতে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো হচ্ছে হাইড্রো কার্বন যা এই কাচটির মধ্যে রাখা আছে৷ আর এই কাচটার উপাদান হচ্ছে এক ধরণের রং এর পাউডার যেটাকে বাষ্পীয়করণের মাধ্যমে এটাতে রাখা হয়েছে৷ আর এটা অত্যন্ত পাতলা; প্রায় ন্যানোমিটার৷ অর্থাৎ মানুষের চুলের এক হাজার ভাগের এক ভাগ৷''

প্রফেসর কার্ল লিও আশা করছেন, আর মাত্র ছয় থেকে সাত বছরের মধ্যেই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠবে এই অর্গানিক এলইডি বা ওএলইডি৷ তিনি বেশ কিছু ধরণের ওএলইডি তৈরি করেছেন, যেগুলো একটি আরেকটির চেয়ে ভিন্ন৷ যে উপাদান দিয়ে এলইডি তৈরি করা হচ্ছে সেগুলোকে বাষ্পীয়করণের মাধ্যমে দুটি অত্যন্ত পাতলা কাচের মধ্যে আটকে ফেলা হচ্ছে যাতে করে সেসব উপাদান বাতাসের সংস্পর্শে না আসে৷ একেকটি ওএলইডি ১০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে৷ তবে কার্ল লিও মনে করছেন এটা খুব বেশি দীর্ঘ সময় না৷ আরও একটি সমস্যা হলো এই ওএলইডি অত্যন্ত ব্যয়বহুল৷ এই ব্যাপারে কার্ল লিও বললেন, ‘‘যেসব উপাদান দিয়ে এই অর্গানিক এলইডি তৈরি হচ্ছে সেগুলো খুব ব্যয়বহুল৷ এর উৎপাদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল এবং অত্যাধুনিক হওয়ায় আমাদের সব ধরণের কারিগরি সহযোগিতা দরকার৷ তবে আমাদের গবেষণার উদ্দেশ্য ব্যয় সাশ্রয় করা নয় বরং যত দ্রুত সম্ভব সেরা প্রযুক্তিটি খুজে বের করা৷''

বিজ্ঞানীরা স্বপ্ন দেখছেন, অদূর ভবিষ্যতে এই ওএলইডিকে এত পাতলা করে তৈরি করা সম্ভব হবে যে সেগুলোকে কাগজের মত করে মুড়ে রাখা যাবে৷ তাহলে এর ব্যবহার কেমন হবে? অদূর ভবিষ্যতে হয়তো কাউকে আর ঘরের সিলিং-এ কিংবা দেয়ালে বাতি ঝুলিয়ে রাখতে হবে না, কারণ গোটা দেয়ালটাই থাকবে ওএলইডিতে মোড়া৷ ফলে একটি সুইচ টেপার সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেয়ালটাই আলোকিত হয়ে উঠবে৷ তবে সেটি এত সহজ হবে না, কারণ ওএলইডির আকারকে আরও বড় করতে হবে এবং সেটিকে আরও পাতলা করে তৈরি করতে হবে৷ এবং সেটা নিয়েই এখন মাথা ঘামাচ্ছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক