ভাইরাল ভিডিওতে কৃষকদের চাপা দেওয়ার দৃশ্য
৫ অক্টোবর ২০২১ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্লোগান দিতে দিতে শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলেন কৃষকরা। হাতে পতাকা নিয়ে। এমন সময় পিছন থেকে একটি এসইউভি এসে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন কয়েকজন কৃষক। গাড়িটি গতি না কমিয়ে সোজা চলে যায়। এই ভিডিও এখন ভাইরাল।
কৃষকদের অভিযোগ এই গাড়ি চালাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে। মন্ত্রী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার ছেলে সেসময় ওখানে ছিলেন না।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ এখনো এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। ডিডাব্লিউয়ের পক্ষেও এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে কংগ্রেস এই ভিডিওটি দিয়ে টুইট করেছে। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও ভিডিও সহ টুইট করে বলেছেন, 'নরেন্দ্র মোদীজি, আপনার সরকার কোনোরকম অর্ডার ছাড়াই আমায় ২৮ ঘন্টা ধরে বন্দি করে রেখেছে। কিন্তু যে ব্যক্তি অন্নদাতা কৃষকদের গাড়ি চাপা দিয়ে মেরেছে, তাকে কেন গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ?' লখিমপুর খেরি যেতে চেয়েছিলেন বলে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুধু প্রিয়ঙ্কা নন, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলশ যাদব, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি, উপ মুখ্যমন্ত্রী এস এস রণধাওয়া, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল-সহ কাউকেই লখিমপুর খেরি যেতে দেয়া হয়নি।
এনডিটিভি-র রিপোর্ট বলছে, ভিডিওতে যে এসইউভি গাড়িটি দেখা গেছে, তার রঙ ও আকার ঘটনাস্থলের অন্য ভিডিওর সঙ্গে মিলে গেছে।
প্রিয়ঙ্কার প্রশ্ন
একটি ভিডিও বার্তা টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কিছু প্রশ্ন করেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেছেন, ''প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লখনউ আসছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কি এই ভিডিও দেখেছেন? না হলে দেখুন।'' এই বলে প্রিয়ঙ্কা একটি মোবাইলে ভিডিওটি দেখান। তারপর তিনি বলেন, ''আপনার সরকারে মন্ত্রীর ছেলে এই কাজ করেছে। কিন্তু মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হলো না কেন? কেন তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হলো না?''
প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ''প্রধানমন্ত্রীজি, মনে রাখবেন, যে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করতে আসছেন, সেই স্বাধীনতা কৃষকরা এনেছে। তাদের ছেলেরা সীমান্তে পাহাড়া দিচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে কৃষক বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। আপনি তাদের দাবি মানছেন না। আপনি একবার লখিমপুর আসুন। কৃষকদের কথা শুনুন। তাদের দাবি মানুন।''
আর রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, ''প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ভীত নন। তিনি অহিংস পথে প্রতিবাদ জানিয়ে যাবেন। তিনি সত্যিকারের কংগ্রেসি।''
সরকারের ঘোষণা
সরকার জানিয়েছে, মৃতদের পরিবারপিছু ৪৫ লাখ টাকা করে দেয়া হবে। আহতরা পাবেন ১০ লাখ টাকা। ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে।
অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্রের নামে এফআইআর করা হয়েছে। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সরকার এই পদক্ষেপ নেয়ার পর মৃতদের দেহ সৎকার করেন আত্মীয়রা।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)