ভাইয়ের হাতে খুন হওয়া পাকিস্তানের সেই বিতর্কিত মডেল
পাকিস্তানে নিজের ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন বিতর্কিত মডেল কন্যা কান্দিল বেলুচ৷ ‘অনার কিলিং’ এর শিকার এই নারী সেদেশের ইন্টারনেট জগতে আলোড়ন তুলেছিলেন খোলামেলা ছবি প্রকাশ করে৷
ফেসবুকে ‘লজ্জাজনক’ ছবি দেয়ায় খুন!
পাকিস্তানের মুলতানে নিজ বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় মডেল কান্দিল বেলুচকে৷ তাঁর ভাই ওয়াসিম আজিম দাবি করেছে, ফেসবুকে ‘লজ্জাজনক’ ছবি প্রকাশ করায় পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য বোনকে খুন করেছেন তিনি৷
ইন্টারনেটে আলোচিত কান্দিল বেলুচ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত ছিলেন কান্দিল বেলুচ৷ রক্ষণশীল পরিবারে বেড়ে ওঠা এই মডেলের টুইটার অনুসারীর সংখ্যা পয়তাল্লিশ হাজারের বেশি এবং ফেসবুকে তা প্রায় আট লাখ৷
পাকিস্তানের ‘কিম কার্দাশিয়ান’
বেলুচকে অনেকে তুলনা করতেন মার্কিন টিভি অভিনেত্রী কিম কার্দাশিয়ানের সঙ্গে৷ ছবি শেয়ার করার ওয়েবসাইট ইন্সটাগ্রামে কার্দাশিয়ানের মতো করে তোলা বেশ কিছু ছবি, ভিডিও শেয়ার করেছিলেন তিনি৷ ছবিগুলো বেশ খোলামেলা৷ এর আগে পাকিস্তানের কোনো মডেলকে এভাবে ছবি পোস্ট করতে দেখা যায়নি৷
‘নগ্ন’ হওয়ার ঘোষণা
চলতি বছর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে পাকিস্তান ভারতকে হারালে নগ্ন হয়ে নাচবেন বলে ঘোষণা দিয়ে তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন বেলুচ৷ পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে হেরে যাওয়ায় নগ্ন না হতে পারার দুঃখে কাঁদার একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ইউটিউবে৷ পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন রক্ষণশীল পরিবারে বেড়ে ওঠা এই মডেল৷
ইসলামের ‘কলঙ্ক’
তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সকল পদ হারান পাকিস্তানের মুফতি আবদুল কাভি৷ পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা এবং ধর্মগুরু হিসেবে পরিচিত কাভি-কে ইসলামের ‘কলঙ্ক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন বেলুচ, কেননা, তাঁর দাবি ছিল, টিভিতে ধর্মের কথা বললেও আড়ালে তাঁর সঙ্গে অনৈতিক কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কাভি৷
নিরাপত্তার শঙ্কা
ইন্টারনেটে সাহসিকতার নানা নমুনা রাখলেও ক্রমাগত বিতর্কের মাঝেই এক পর্যায়ে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় পড়ে যান কান্দিল বেলুচ৷ খুন হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে তাই পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ কয়েকজনের কাছেই নিজের নিরাপত্তা দাবি করেছিলেন৷
শাস্তি হবে কি?
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে প্রতিবছর গড়ে এক হাজারের মতো ‘অনার কিলিং’ এর ঘটনা ঘটে৷ এগুলোকে হত্যাকাণ্ড হিসেবেই বিবেচনা করে বিচারের ব্যবস্থা থাকলেও পাকিস্তানের আইনে পরিবার চাইলে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ আর এই সুযোগ নিয়ে অনেক সময় হত্যাকারী পার পেয়ে যায়৷