ভাঙড়-জুড়ে ছড়িয়ে আছে সহিংসতার চিহ্ন
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপর্বে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয়েছে, রক্তপাত হয়েছে ভাঙড়ে। ঘুরে দেখলো ডিডাব্লিউ।
যুদ্ধক্ষেত্র বিজয়গঞ্জ বাজার
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত খবরের শিরোনামে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার এলাকা। মনোনয়নের দিনগুলিতে ভাঙড়-২ নম্বর বিডিওর চেহারা শাসক-বিরোধীদের যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল।
বোমা, গুলি, গাড়ি পোড়ানো
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে প্রতি দিনই বোমাবাজি, গুলি, ইটবৃষ্টি, পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এলাকা।
দোকানে আগুন
মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন অশান্তির আঁচ পেয়ে অনেকেই দোকান বন্ধ করে চলে গিয়েছিলেন, কিন্তু দুষ্কৃতিরা বন্ধ দোকানেও আগুন লাগিয়ে দেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বন্ধ দোকান লুট
বিজয়গঞ্জ বাজারে পান-বিড়ির দোকান চালান মেহেতাব আলি। তার বন্ধ দোকানেও লুটপাট চালানো হয়ে বলে জানান তিনি।
ছড়িয়ে আছে সহিংসতার চিহ্ন
মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও এলাকায় ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে বোমা, কার্তুজের বাক্স, বন্দুকের অংশ। পড়ে আছে পোড়া গাড়িগুলি। দেখেই বোঝা যায়, কী হয়েছে ভাঙড়ে।
সহিংসতার শীর্যে ভাঙড়
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে অশান্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা। তবে অশান্তিতে শীর্ষে উঠে এসেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। ছবিতে উদ্ধার হওয়া বোমা ও কার্তুজের প্যাকেট।
মৃত তিন
এই অশান্তিতে তিন জনের প্রাণ গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। তাঁদের মধ্যে এক জন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) কর্মী, অন্য দু’জন শাসক তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। মতান্তরে দুইজন আইএসএফ এবং একজন তৃণমূল কর্মী মারা গেছেন।
এই সেই বিডিও অফিস
এখানেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে হচ্ছিল। কিন্তু অভিযোগ, এই অফিস-চত্বরের মধ্যে ও বাইরের জায়গা শাসক দলের কর্মীরা শাসন করেছে। কাউকে ঢুকতে দেয়নি। ফলে অনেক বিরোধী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি।
ব্যবস্থা ছিল, তাও অভিযোগের অন্ত নেই
সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, পুলিশ ছিল, তাও মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। ফলে অনেক জায়গায় তৃণমূল কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া জিতে গেছে।
দোকানপাট এবার খুলছে
গত কয়েকদিন বন্ধই ছিল দোকানপাট থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য। রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন এলাকার সাধারণ মানুষ। তবে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পর শুক্রবার থেকে ভাঙড়ের পরিস্থিতিতে সামান্য বদল এসেছে বলছে স্থানীয় মানুষ।
রাজ্যপাল ভাঙড়ে
শুক্রবার দুপুরে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার পৌঁছান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তার পর যান ভাঙড় ২ নং ব্লক অফিসে। সেখানে কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে
রাজ্যপাল কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গেও। বোঝার চেষ্টা করেন অশান্তির কারণ। পরে রাজভবনে একটা হেলপলাইন নম্বর খোলা হয়েছে। সেখানে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারলে ফোন করে জানানো যাচ্ছে।
রাজ্যপালের বৈঠক
এরপর রাজ্যপাল পৌঁছান ভাঙড় কলেজে। কলেজে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। কলেজের বাইরে আইএসএফ কর্মীরা রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
মনোনয়ন দিতে পারেনি
বহু আইএসএফ কর্মীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তারা মনোনয়নপত্র হাতে নিয়ে জমায়েত করেন কলেজের ক্যাম্পাসে। রাজ্যপালের বেরনোর অপেক্ষা করতে থাকেন তারা।