ভাত খেলেও ক্যানসার
২৬ জুলাই ২০১৩বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং চীনের জন্য দুশ্চিন্তাটা একটু বেশি হওয়ার কথা, কারণ, গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অঞ্চলের পানিতে আর্সেনিক বেশি সেসব অঞ্চলের ধান থেকে তৈরি চালেই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি৷ ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার এবং ভারতের ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির গবেষকরা পশ্চিমবঙ্গের ৪১৭ জন গ্রামবাসীকে নিয়ে কাজ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, উচ্চমাত্রার আর্সেনিক যুক্ত পানিতে চাষ করা ধান ক্যানসারে মৃত্যুর শঙ্কা বাড়ায়৷
নেচার গ্রুপের সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ৪১৭ জন গ্রামবাসীর জীবনযাপন, প্রতিদিন কতটুকু চালের ভাত খান এই দুটো বিষয় জানার পর, প্রত্যেককে বলা হয়েছিল রান্না করা ভাতের নমুনা এবং নিজেদের প্রস্রাবের নমুনা সরবরাহ করতে৷ সূক্ষ্ম অথচ জটিল এক পরীক্ষার পরই বিজ্ঞানীরা বলছেন, পানির মাধ্যমে চালেও বেশি আর্সেনিক চলে এলে সেই চালে রান্না করা ভাত মানুষকে ধীরে ধীরে নিয়ে যেতে পারে ক্যানসারের কবলে৷
সেক্ষেত্রে যেসব চালে আর্সেনিক কম সেই চালের ভাত খেলেই নিরাপদ থাকা যাবে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোন চালে আর্সেনিক কম তা কিভাবে জানা যাবে? বাংলাদেশের মানুষদের আর্সেনিকযুক্ত চাল খেয়ে ক্যানসারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি আসলে কতটা? দুটো প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন ব্রিটেনের ডি মনফর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী পারভেজ হারিস৷ বাংলাদেশের ঝুঁকি সম্পর্কে তিনি জানান, স্বতন্ত্র এক গবেষণার ফলাফলে তাঁরা দেখেছেন যে বাংলাদেশের অনেক চালে আর্সেনিকের মাত্রা বেশ কম৷ তবে কোন চালে আর্সেনিক কম, সেটা জানার যে এখনো কোনো উপায় নেই তা স্বীকার করে এ অবস্থার পরিবর্তন দাবি করেছেন তিনি৷ তাঁর মতে, বাজারে শুধু প্যাকেটজাত চাল বিক্রি হলে এবং সেখানে আর্সেনিকের মাত্রা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য দেয়ার ব্যবস্থা করলেই মানুষ টাকা খরচ করে ভালো চাল কিনে সুস্থ জীবনযাপনের নিশ্চয়তা পাবে৷ দুঃখজনক ব্যাপার হলো – এখনো কোথাও চালের প্যাকেটে সেই তথ্য দেয়া হয় না৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি)