ভারত বনধে মিশ্র সাড়া
২০ সেপ্টেম্বর ২০১২খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি এবং ডিজেলের দাম বাড়ানোর মতো সরকার ঘোষিত আর্থিক সংস্কারের প্রতিবাদে বিজেপি, বাম ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলির ডাকা ১২ ঘণ্টার ভারত বনধে মিশ্র সাড়া৷ বিরোধী দলের প্রাধান্য রয়েছে এমন রাজ্যগুলিতে বনধের প্রভাব ছিল বেশি এবং কংগ্রেসপ্রধান রাজ্যগুলিতে কম৷ বিহার, পাঞ্জাব, কর্নাটকের জনজীবন বিপর্যস্ত৷ বনধ সমর্থক দলগুলির নেতা কর্মীরা বিভিন্ন রাজ্যে গ্রেপ্তার বরণ করেন৷
দিল্লিতে বনধের প্রভাব বেশি পড়েনি৷ অর্ধেক দোকানপাট ছিল খোলা৷ যানবাহন চলাচল প্রায় স্বাভাবিক৷ তবে অটোরিক্সা কমই চোখে পড়ে৷ দিল্লি রেল স্টেশনে এর জন্য যাত্রিদের ভুগতে হয়৷ মেট্রো ট্রেন অবশ্য যথারীতি চলেছে৷ কিছু বেসরকারি স্কুল বন্ধ থাকে৷ অফিসে হাজিরা ছিল সামান্য কম৷
বিহার, ওড়িষা, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর প্রদেশে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় রেল লাইন অবরোধে৷ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বাম ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় গতকালই এই বনধকে কর্মনাশা, ধর্মনাশা, অর্থনাশা অ্যাখ্যা দিয়ে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন যে, কথায় কথায় রাজ্যে বনধের রাজনীতি বরদাস্ত করা হবেনা৷
বিহারে বনধের সমর্থনে পথে নামে শাসকদল সংযুক্ত জনতাদল৷ উত্তর প্রদেশে নামে সমাজবাদী পার্টি৷ ওদিকে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র এবং ওড়িষায় বনধ পালিত হয়নি উৎসব অনুষ্ঠানের জন্য৷
প্রতিবাদ বিক্ষোভ মূলত খুচরো বাজারে বিদেশি লগ্নি নিয়ে৷ এই ইস্যুর ইতিবাচক বা নেতিবাচক দিকগুলির প্রকৃত বাস্তব মূল্যায়ন হবার আগেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সরকারকে আরো কোণঠাসা করার এমন মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ৷ ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি বড় বালাই৷ বামদল এই বনধকে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের এক সম্ভাবনা বলে মনে করছে৷ আর কংগ্রেস বলছে, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নিতে দেশ উপকৃত হবে৷ বাইরে থেকে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে৷ তাই ছোট দোকানদার বা কৃষিজীবীরা মার খাবে এই ধারণা দূর করা দরকার৷ সারা বিশ্ব তাহলে এ পথ গ্রহণ করতো না৷
বনধ সমর্থক বিজেপি'র মত হলো, বর্তমান সরকারকে জনতা ভোট দিয়েছে৷ যেসব দল সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন দিচ্ছে তাদের উচিত, অর্থ ব্যবস্থা ও দেশের গরিব মানুষদের প্রতি কতটা দায়বদ্ধ - তা প্রমাণ করা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ