ভারতে খালেদা
২৬ অক্টোবর ২০১২বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের আগে ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দিল্লি সফর করতে চলেছেন বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া৷ বলা বাহুল্য, তাঁর এই দিল্লি সফর রাজনৈতিক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ৷ ২৮শে অক্টোবর তিনি প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে৷ সাক্ষাৎ করবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ ও অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, খালেদা জিয়ার ভারত বিদ্বেষ সুবিদিত৷ তাই বিএনপি ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে তাঁর সরকারের অতীতের শুকনো সম্পর্কে জলসিঞ্চন যে দরকার, সেটা খালেদা জিয়া বুঝতে পেরেছেন৷ ভারতেরও প্রয়োজন বাংলাদেশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ জমানায় যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলি এগিয়ে নিয়ে যেতে বিএনপি'র সঙ্গে সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বললেন, খালেদা বুঝেছেন ভোটে জিততে হলে হিন্দু ভোট না হলেই নয়৷ বাংলাদেশে হিন্দু ভোট ১৬%৷ এছাড়া, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা ভালো হবে তার ওপরও অনেকটা নির্ভর করছে হিন্দু ভোট৷
ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি সই হয়নি, সেগুলি যাতে সই হয়, সেজন্য তিনি তাঁর দেশে ভারত-বিরোধী যে অংশ আছে তাদের বোঝাতে পারবেন যে ভারতের সঙ্গে বোঝাপড়া হয়ে গেছে৷ বেগম খালেদা এও বুঝতে পেরেছেন যে, ভারত-বিরোধীতা সম্বল করে আর মৌলবাদীদের সমর্থন নিয়ে এবার ভোটে জেতা মুশকিল৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও চায়, যে দলই ক্ষমতায় আসুক, মৌলবাদীদের থেকে যেন দূরে থাকে৷
অন্যদিকে ভারতও বুঝেছে, আওয়ামী লীগ শাসনে যে সব চুক্তি সই হয়েছে, যেমন স্থলসীমা চুক্তি ইত্যাদি তার বাস্তব অগ্রগতির জন্য বেগম জিয়াকে পাশে চাই৷
মোটকথা, বেগম জিয়ার এই ভারত সফর ভারতের সঙ্গে সামগ্রিক সম্পর্কটা ঝালিয়ে নেবার এক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং তাঁর ভারত-বিরোধী ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলে বন্ধুত্বের নতুন বিন্যাসই তাঁর লক্ষ্য৷