ভারতীয় ছেলেকে বিয়ে করতে পাকিস্তানি মেয়ে কলকাতায়
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে পাকিস্তানের মেয়ে জাভেরিয়া খানুম কলকাতায় এসেছেন সমীর খানকে বিয়ে করতে।
ভালোবাসার গল্প
এর মধ্যে পরিবার ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার গল্প নেই, সামাজিক মাধ্যমে ভালো লেগে দেশ ছেড়ে আসার পাগলামির কাহিনি নেই, আছে নিখাদ শুধু ভালোবাসার গল্প। মায়ের মোবাইলে জাভেরিয়ার ছবি দেখে প্রেমে পড়ে যায় সমীর। সেই ছবিও সে দেখে জার্মানি থেকে ফেরার পথে বিমানে বসে। ছবি একঝলক দেখেই ভালোলাগা ও ভালোবাসায় পড়ে যাওয়া।
মা-র কাছে আবদার
সমীর এরপর মা নুসরত খানকে ধরে, ছবির এই মেয়েকেই সে বিয়ে করবে। জাভেরিয়া আবার নুসরতের আত্মীয়। নুসরতের প্রথমে কিছুটা দ্বিধা ছিল। পাকিস্তানের মেয়ে। তার পরিবার কি ভারতে মেয়ের বিয়ে দেবে? কিন্তু পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইলে থাকা নুসরতের পরিবারের কাছে প্রস্তাব যাওয়ার পর দেখা গেল, তারা রাজি।
থাইল্যান্ডে প্রথম দেখা
দুই পরিবার এরপর থাইল্যান্ডে দেখা করে। সমীর ও জাভেরিয়ার চার চোখের মিলন হয়। ছবির ভালোবাসা বাস্তবেও রূপ পায়। সমীর ও জাভেরিয়া বিয়ের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু তখন বোঝা যায়নি, সেই প্রেমের পরিণতির পথে এত বাধা আসবে।
সমীরের মা যা বললেন
নুসরত জানিয়েছেন, এই বিয়ের জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। দুইবার জাভেরিয়ার ভিসা খারিজ হয়ে গেছে। তারপর করোনাকাল এসেছে। শেষপর্যন্ত ভিসা পাওয়া গেছে। এবার বিয়ের পথে কোনো বাধা নেই। এই পাঁচটা বছর বিয়ে নিয়ে তারা খুবই উদ্বেগে কাটিয়েছেন। আশা-নিরাশার দোলায় দুলেছেন। তবে সব ভালো যার শেষ ভালো।
জাভেরিয়া যা বলেছেন
ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢোকার পরই অভ্যর্থনা ও ভালোবাসা পেয়ে জাভেরিয়া আপ্লুত। তিনি বলেছেন, ''ভারতে ঢোকার পর সকলে আমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বিপুল অভ্য়র্থনা হয়েছে। আমি, আমার পরিবার খুবই খুশি। ভারত সরকার ৪৫ দিনের ভিসা দেয়ায় আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।'' ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ''আমি চাইব, ভিসার মেয়াদ যেন আরো বাড়ানো হয়।''
সমীরের স্বপ্নপূরণ
জাভেরিয়াকে ওয়াঘাতে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সমীর উপস্থিত ছিল। রীতিমতো ঢোল বাজিয়ে নেচেগেয়ে উৎসব পালন করা হয়। তারপর জাভেরিয়াকে কলকাতার বাড়িতে নিয়ে আসে সমীর। স্বপ্নপূরণের আনন্দে সপ্তম স্বর্গে সমীর। সে এখন চায়, দুই দেশের সরকার এরকম দম্পতিদের জন্য যেন বিশেষ ভিসার ব্যবস্থা করে।
কলকাতাও উৎসুক
এই বিয়ে নিয়ে কলকাতাতেও ঔৎসুক্য বাড়ছে। আগ্রহ বাড়ছে সমীর-জাভেরিয়ার প্রেমকাহিনি ঘিরে। তবে সমীর-জাভেরিয়া বিয়ে নিয়ে প্রচারের বাড়াবাড়ি চাইছেন না। তবে এটা তো নিছক কোনো বিয়ে নয়, ভারত ও পাকিস্তানের দুই পরিবারের মধ্যে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। সামান্য হলেও তার একটা প্রভাব তো দুদেশের সাধারণ মানুষের উপরে পড়ার কথা।
জানুয়ারিতে বিয়ে
জাভেরিয়া এসে গেছে। বাধা দূর হয়েছে। এখন শুধু শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে। জানুয়ারির গোড়াতেই বিয়ে। কয়েকদিন ধরে চলবে অনুষ্ঠান। তারপর? অপূর্ব এক প্রেমকাহিনি সফল হবে। সমীর-জাভেরিয়ার খুশিতে সামিল হবে দুই দেশের অনেক মানুষ।