1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে এখন চলছে মেদহীন ফ্যাশনের হাওয়া

৫ মার্চ ২০১০

পশ্চিমের মডেলদের অনুকরণে বলিউডের বর্তমান অভিনেত্রীরা মেদ ঝরিয়ে শুকিয়ে যাচ্ছেন, আর এর প্রভাব পড়েছে ভারতের বিভিন্ন শহরে তাদের ফিল্মভক্ত অনুরাগীদের ওপরে৷

https://p.dw.com/p/MLCv
বলিউড তারকা কারিনা কাপুর (ফাইল ছবি)ছবি: AP

সুন্দর ও আকর্ষণীয় শরীরের অধিকারী ছিলেন এক সময়কার দর্শক সফল নায়িকা মমতাজ ও জিনাত আমান৷ কিন্তু শরীরের বাঁকগুলো তাদের অভিনয় জীবনে সফলতা ও জনপ্রিয়তায় কখনও বাধা হয়েও দাঁড়ায়নি৷ আজকের বলিউড অভিনেত্রীরা নিয়মিত ডায়েট করে থাকেন৷ মেদ জমবার কোন সুযোগ তাঁরা রাখেননা৷ ফিট থাকতে হয় তাঁদের৷ দেহকে সুন্দর রাখতে হয়৷ পারদর্শিতা থাকতে হয় নাচে৷ এই সবকিছু মিলিয়েই তাঁদের জনপ্রিয়তা৷

মুম্বইয়ের ফিটনেস কনসালটেন্ট এবং পুষ্টিবিজ্ঞানী বেণু হিরানি বলেন, গত দশকে অনেক পরিবর্তন এসেছে৷ আর তা মডেলিং-এই হোক বা বলিউডে৷ হিরানি বলেন, এই পেশায় যারা প্রবেশ করতে চান তাদের হতে হবে জিরো সাইজ দেহের অধিকারিণী৷

২০০৮ সালে ‘তাসহান' ছবিতে বিকিনি পরে অভিনেত্রী কারিনা কাপুরের আবির্ভাব ব্যাপক সাড়া ফেলে৷ ২৯ বছর বয়সি এই অভিনেত্রী বলেন, তার বর্তমান ওজন মোটেও অস্বাস্থ্যকর নয়৷ বরং এই কম ওজন ধরে রাখতে পেরেছেন তিনি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেয়ে, নিয়মিত শরীরচর্চা করে, যোগাভ্যাস করে৷

এদিকে, বিপাশা বসু ও শিল্পা শেঠী ফিটনেস এবং যোগব্যায়ামের ভিডিও বাজারে ছেড়েছেন৷ বলিউডের অন্যান্য অভিনেত্রীদের মধ্যে যেমন- প্রিয়াংকা চোপড়া ও দীপিকা পাড়ুকোন প্রায়ই তাদের শরীর ঠিক রাখার পেছনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তাকেই বেশি গুরুত্ব দেন৷

স্বভাবতই কারিনা, বিপাশা বা শিল্পার মত অভিনেত্রীরা শরীরকে মেদশূণ্য রাখতে ব্যক্তিগত ডায়েট বিশেষজ্ঞ ও ফিটনেস ট্রেনারদের পরামর্শ নিয়ে থাকেন নিয়মিত৷ কিন্তু ভক্তদের তো আর সেই সুয়োগ নেই৷ তারা নায়িকাদের অনুকরণ করে যেনতেন প্রকারে ওজন কমাতে সচেষ্ট হয়৷ আর তার ফল হয় অনেক সময় মারাত্মক৷

হিরানী জানান, এখন তাঁর কাছে পরামর্শের জন্য এমন অনেকেই আসেন যাদের কিনা ওজন কমাবার কোন প্রয়োজনই নেই৷ অথচ এক দশক আগে মানুষ শুধুমাত্র মা হবার পর বাড়তি মেদ কিভাবে ঝরাবেন বা তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা কীরকম তা জানতে তার কাছে আসতেন৷ এখন বর্তমান প্রজন্মের যারা তাঁর কাছে আসছেন তারা জানতে চান কিভাবে তারা আরও পাঁচ কিলো ওজন কমাতে পারবেন৷ যদিও তা অপ্রয়োজনীয়৷

মুম্বইয়ের আরেক ডায়েটেশিয়ান ও কনসালটেন্ট রোশনি পিঠাওয়ালা বলেন, ভারতীয়রা কিভাবে তাদের শারীরিক কাঠামোকে দেখছে বদলে যাচ্ছে বলিউড, ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ, কেবেল টেলিভিশন এবং বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে৷

আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ভারতে অ্যানোরেক্সিয়া বুলিমিয়ার মত ইচ্ছে করে না খেয়ে থাকা বা প্রয়োজনের চেয়ে কম খেয়ে থাকা জনিত রোগ বাড়ছে৷

রোশনি পিঠাওয়ালা আরও বলেন, ২০০৭ সালের মে মাসে প্রকাশিত ভারতীয় শিশুবিশেষজ্ঞ জার্নালের তথ্য অনুযায়ী সামাজিক-অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে এবং পশ্চিমা ধ্যান ধারণায় শুধু সংস্কৃতি নয় পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে খাদ্যাভ্যাসেও৷

তিনি আরও বলেন, ভক্তরা তাদের প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়৷ তবে, সুন্দর ঐ দৈহিক কাঠামোর পেছনে তারকারা ব্যয় করেন কোটি কোটি টাকা৷ তাদের অনুরাগীদের জন্য তা অবাস্তব এক লক্ষ্য৷

এমন কি কারিনা কাপুর নিজেও মনে করেন তাঁর নিজের জন্য যা সঠিক তা অন্যদের বেলায় খাটবে এমনটি ভাবা ঠিক নয়৷

প্রতিবেদক : আসফারা হক

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক