ক্যান্সার রোগী
১৩ মার্চ ২০১২কিডনি ও লিভার ক্যান্সারের জীবনদায়ী ওষুধ নেক্সাভির৷ জার্মানির বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি বায়ার-এর পেটেন্ট করা৷ ভারতে আমদানি করা এই ওষুধের ১২০টি ক্যাপসুল প্যাকের দাম ২লাখ ৮৪ হাজার টাকা৷ দাম কমাতে অস্বীকার করায় ভারতের পেটেন্ট অফিস ন্যাটকো নামে হায়দ্রাবাদের একটি ওষুধ কোম্পানিকে ঐ ওষুধ ভারতে তৈরি ও বিক্রি করার আবশ্যিক লাইসেন্স দিয়েছে৷ ভারতে এই ধরণের লাইসেন্স এই প্রথম, যা নিঃসন্দেহে যুগান্তরকারী৷ এর ফলে ভারতে এই ওষুধের দাম ৯৭ শতাংশ কমে হবে ৮,৮৮০ টাকা৷
এটা কতটা সঙ্গত? ভারতীয় কোম্পানি ন্যাটকো ভারতীয় পেটেন্ট আইনের ৮৪ নং ধারা অনুসারে আবশ্যিক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিল৷ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়মবিধি অনুসারে ভারতের পেটেন্ট অফিস তা মঞ্জুর করে শর্তাধীনে৷ ঐ ওষুধ রপ্তানি করা যাবেনা এবং তৈরি ও বিক্রি করার জন্য ভারতীয় কোম্পানি ৬ শতাংশ রয়্যালটি দেবে বায়ারকে৷ দ্বিতীয়ত, ভারতে ক্যান্সার রোগীদের পুরো চাহিদা মেটাতে পারছেনা বায়ার, এটাও একটা কারণ৷ উল্লেখ্য, এই ধরণের আবশ্যিক লাইসেন্স ব্রাজিল, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও বৈধ৷
ভারতের এই সিদ্ধান্তে বায়ার অসন্তুষ্ট৷ কারণ উন্নয়ন ও গবেষণায় যে পরিমাণ অর্থ সংস্থা ব্যয় করেছে, বিক্রির অর্থ তারা পুনর্বিনিয়োগ করে ক্যান্সার ওষুধের আরো গবেষণা ও উন্নয়নে৷ কাজেই এটা তারা মেনে নিতে পারেনা৷ আইনি পথে এর মীমাংসার কথা বলেছে বায়ার৷ অন্যান্য বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলি অনুরূপ মত ব্যক্ত করে৷ কারণ তাদের আশঙ্কা, এরপর পেটেন্ট করা ওষুধের দামের উপর উদ্ভাবক কোম্পানির কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবেনা৷
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ভবিষ্যতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলিকে জীবনদায়ী ওষুধ বিশেষ কোরে ক্যান্সার ও এইচ আই ভি রোগের ওষুধের দাম আকাশছোঁয়া রাখার আগে দুবার ভাবতে হবে৷ বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অনেকে দুরকম দামের কথা বলেন৷ একটা দাম ধনী দেশের জন্য, অন্য দাম বিকাশমুখী দেশের জন্য৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন