ভারতে গাছের লড়াই জোরদার
১৫ জানুয়ারি ২০১৮গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি, সংক্ষেপে এপিডিআর প্রথম মামলাটি করেছিল সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে৷ যশোর রোড, অর্থাৎ ১২ এবং ১১২ নং জাতীয় সড়ক চওড়া করতে প্রায় ৪০০০ গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য পূর্ত দপ্তর৷ এই গাছগুলির কোনও কোনওটার বয়স ২০০ বছরেরও বেশি৷ কোনও কোনও গাছের গুঁড়ি এত প্রকাণ্ড যে, আধ ডজন মানুষ মিলেও তা বেড়ে পাবে না৷ যশোর রোডের মাথার ওপর প্রাকৃতিক ছাতা হয়ে বছরের পর বছর টিকে থেকেছে যে গাছ, তাদের খুনের চেষ্টার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগণার মানুষও৷ দ্বিতীয় আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছিল তাঁদের তরফ থেকেও৷
হাইকোর্ট গাছ কাটার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে'র এজলাসে এই দুটি মামলার একসঙ্গে শুনানি শুরু হয়৷ শুনানি পর্ব শেষও হয়ে গিয়েছিল৷ হাইকোর্ট নিযুক্ত এক কমিটি পরিদর্শনের পর রিপোর্ট দিয়েছিল, গাছ না কেটে যশোর রোড চওড়া করা সম্ভব নয়৷ কিন্তু মামলার রায় দানের সময় যখন এগিয়ে এসেছে, তখনই প্রধান বিচারপতি পদে নিশীথা মাত্রের মেয়াদ শেষ হয়৷ তাঁর পরিবর্তে যিনি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন, তিনি বিষয়টি দ্বিতীয়বার খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেন৷ সেই প্রক্রিয়াও এবার শেষ হওয়ার মুখে৷ ডয়চে ভেলেকে জানালেন সীমান্ত শহর বনগাঁর বাসিন্দা, কবি এবং এই গাছ বাঁচাও আন্দোলনের সঙ্গে প্রথম থেকে যুক্ত বিভাস রায়চৌধুরি৷
তবে আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি গাছ বাঁচাও আন্দোলনকেও জোরদার করে চলেছেন পরিবেশ কর্মী রাহুল বিশ্বাস৷ এর আগে তিনি যশোর রোডের ওপর দিয়েই একেবারে বনগাঁ সীমান্ত পর্যন্ত পদযাত্রা করেছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানাচ্ছেন, যশোর রোডের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষদের বোঝানো, সচেতন করার কাজও জারি আছে৷ পাশাপাশি, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এক পদযাত্রার কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা, যা শুরু হবে দার্জিলিংয়ে, শেষ হবে সাগরদ্বীপে৷ রাহুল জানাচ্ছেন, আরও বেশি মানুষ এবং সংগঠনকে পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলনে সামিল করাই তাঁদের মূল লক্ষ্য৷
কেবল যশোর রোডের গাছ বাঁচানোই না, রাজ্যের অন্য এলাকার পরিবেশ সমস্যার বিষয়গুলিকেও একই সূত্রে গাঁথতে চান তাঁরা৷ ওদিকে আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, খুব শিগগিরই যশোর রোডের গাছ বাঁচানোর প্রশ্নে সওয়াল-জবাব শেষ করে নিজের রায় জানাবে আদালত৷