ভারতে জমজমাট ‘লেডিস স্পেশাল’
১৩ অক্টোবর ২০০৯লেডিস স্পেশাল-এ মজাটা কী? একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের এমন প্রশ্নের উত্তরে মুম্বইয়ের ট্রেন যাত্রী সুপ্রিয়া ব্যানার্জি জানালেন, সাধারণ ট্রেনে অনেক সময় আমরা সিট পেতাম না, ফলে দাঁড়িয়ে যেতে হতো৷ এসব ট্রেনে নিরাপত্তা না থাকায় প্রায়শই চুরি, ছিনতাই এর ঘটনাও ঘটতো৷
তবে লেডিস স্পেশাল-এ নাকি এসব ঝামেলা নেই, মত সুপ্রিয়ার৷ তাঁর মতে আরেক যাত্রী দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সঙ্গীতা৷ জানালেন, সাধারণ ট্রেনে পুরুষরা মেয়েদের গায়ে হাত দিয়ে কিংবা চিমটি কেটে বিরক্ত করে৷ লেডিস স্টেশাল এসব বিড়ম্বনা থেকে মেয়েদের মুক্তি দিয়েছে৷
তিনি আরো জানালেন, এখানে কেউ আমাদের উদ্দেশ্যে কটু মন্তব্য ছুঁড়তে পারে না, ঠাট্টাচ্ছলে বাজে কথা বলতে পারেনা৷
শুধু নারীদের জন্য চালিত এসব ট্রেন সাজানোও হয়েছে বিশেষ রংয়ে৷ ইঞ্জিনের অংশটার রং নীল এবং লাল৷ আর যাত্রীবহনকারী কোচগুলো হলুদ৷ শুধু তাই নয়, আসন বিন্যাসও করা হয়েছে নারীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা বিবেচনায় এনে৷
লেডিস স্পেশাল কিন্তু শুধুমাত্র যাত্রা পথেই শান্তি দিচ্ছে না ভারতীয় নারীদের৷ বরং ঘরেও নাকি পৌঁছচ্ছে এই শান্তি৷ কীভাবে? ভারতের উত্তরাঞ্চলের রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার বিবেক সাহা জানালেন, বিশেষ এই ট্রেনগুলোতে মহিলাদের বসার জন্য প্রশস্ত আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আর তাই আগের মতো ভ্রমণ ক্লান্ত হয়ে পড়েননা তারা৷ ফলে ঘরে গিয়ে রান্নাবান্না কিংবা পরিবারকে আরো বেশি সময় দিতে পারছেন মহিলারা৷
লেডিস স্পেশালের নিরাপত্তার জন্যও আছে বিশেষ রেল পুলিশ৷ পুরুষদের প্রবেশ ঠেকাতে টিকিট চেকারদের সঙ্গে ট্রেনের মধ্যে টহল দেন তাঁরা৷
অবশ্য এতকিছুর মধ্যেও মাঝে মাঝে নাকি পুরুষরা ঢুঁ মারা চেষ্টা করে লেডিস স্পেশালে৷ কেউ কেউ দাবি করে লেডিস স্পেশাল তুলে দেয়ার, জানালো কলকাতার মেয়ে অর্চনা৷ তার কথায়, তারা হয়তো মনে করছে, সরকার শুধু মেয়েদের সাহায্য করছে – পুরুষদের নয়৷
প্রসঙ্গত, ভারতে বছর কয়েক আগেই সাধারণ ট্রেনের সঙ্গে মহিলাদের জন্য বিশেষ কোচ চালু করা হয়েছিল৷ তবে পুরুষদের চাপে তা খুব একটা কাজে আসছিল না৷ আর তাই ভারতের রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সম্প্রতি চালু করেন শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য বিশেষ ট্রেন৷ আপাতত এমন ট্রেনের সংখ্যা আট৷ তবে ভবিষ্যতে নাকি এই সংখ্যা আরো বাড়বে৷ জয়তু লেডিস স্পেশাল!
প্রতিবেদক: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন