‘না’ ভোট চাই বাংলাদেশেও
৬ মার্চ ২০১৪বাংলাদেশে ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ‘না' ভোট দেয়ার সুযোগ ছিল৷ ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নির্বাচনি আইন সংশোধন করে ‘না' ভোটের বিধান চালু করা হয়৷ তবে সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নির্বাচনি আইন সংশোধন করে ‘না' ভোটের বিধান বাতিল করা হয়৷ কিন্তু বুধবার ভারতের লোকসভা নির্বানের তফসিল ঘোষণা এবং প্রথমবারের মতো সেখানকার নির্বাচনে ‘না' ভোটের বিধান চালু হওয়ায়, তা বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে৷
সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজন-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, বাংলাদেশে যে ‘না' ভোটের বিধান করা হয়েছিল, তা ছিল ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার৷ পরে সরকার ‘না' ভোটের বিধান তুলে দিয়েছে, যা দুঃখজনক৷ এটা ভোটারদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে৷ কারণ ভোটারের কোনো প্রার্থী পছন্দ না হলে তা জানানোর সুযোগ এখন আর নেই৷ তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ‘না' ভোটের বিধান চালু করায় বাংলাদেশের পুনরায় এটা চালুর দাবি প্রশস্ত হলো৷ বাংলাদেশ ‘না' ভোটের বিধান চালু করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল৷ আবারো সেই দৃষ্টান্ত ফিরিয়ে আনতে হবে৷
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘না' ভোট গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভারত এ নিয়মটি চালু করে সেদেশের ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার আরো সংহত করল৷ আর আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা সম্ভবত ‘না' ভোটকে ভয় পান৷ তাই চালু করেও তা বাতিল করা হয়েছে৷
তিনি বলেন, ভারতের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্যও ইতিবাচক৷ বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন চাইলে এখন নিজোরাই ভারতের উদাহরণ দেখিয়ে ‘না' ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনতে পারে৷ এছাড়া সুশীল সমাজসহ সবাই এর জন্য জোড়াল দাবি তুলতে পারে৷
উল্লেখ্য, ভারত হলো বিশ্বের ১৪তম দেশ যারা ব্যালট পেপারে ‘না' ভোটের বিধান চালু করেছে৷ ভারত ছাড়াও ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, গ্রিস, ইউক্রেন, চিলি, স্টেট অফ নেভাডা, ফিনল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, স্পেন এবং সুইডেনে নির্বাচনে ‘না' ভোট দেয়ার সুযোগ আছে৷ আর বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যারা ‘না' ভোটের বিধান চালু করে পরে তা বাতিল করেছে৷