ভারতের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের ভাবনা
ভারতে সাত ধাপে লোকসভা নির্বাচন চলছে৷ শেষ হবে ১ জুন৷ ফল ঘোষিত হবে ৪ জুন৷ সে দেশের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন দল কী ভাবছে, তা নিয়ে এই ছবিঘর৷
খরতাপের কারণে ভোটের হার কম: এস এম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগ
ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ৷ সেখানে ভোট হচ্ছে৷ ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন৷ তারাই তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করছেন৷ আশা করি, সেখানে শেষ পর্যন্ত ভোট ভালোই হবে৷ ভোটে যারা ক্ষমতায় আসবেন, তাদের সঙ্গেই আমাদের সরকারের সুসম্পর্ক থাকবে৷ ভারতে ভোটের হার কমার কারণ হতে পারে খরতাপ, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া৷
মোদী এখন টালমাটাল: ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি
এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে মোদীর ৪০০ পার হওয়া তো দূরের কথা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কাছে তারা পরাজিতও হতে পারে৷ আর কাশ্মীরে বিজেপি কোনো আসন পাবে না জেনেই প্রার্থী দেয়নি৷ তাদের সীমিত স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে সেখানে কাশ্মীরী জনগণ আগের চেয়ে বেশি হারে ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়েছে৷ মোদীর নাগরিকত্ব আইন, ধর্মীয় উন্মাদনা কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ মোদী এখন টালমাটাল অবস্থায় আছেন৷
ভারতে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হচ্ছে: ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, জাতীয় পার্টি
আমার মনে হয় ভারতে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হতে যাচ্ছে৷ আমরা বিজেপি ও আরএসএসের যে শক্ত ভিত্তির কথা মনে করেছিলাম, তাতে ভাটার টান দেখতে পাচ্ছি৷ এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য যে, একটি দল বা মত দীর্ঘদিন শাসন করতে পারবে না৷ ভারতের জনগণ তার প্রকাশ ঘটাচ্ছে৷ আমাদের এখানেও যদি নির্বাচন ব্যবস্থা ঠিক থাকে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তাহলে এখানেও কোনো দল দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না৷
ভারতে নির্বাচন পরিচালনাকারীরা তুলনামূলক স্বাধীন: হাসানুল হক ইনু, জাসদ
নির্বাচনি প্রচারে মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যাসহ আরো যে সমস্যা আছে তা প্রাধান্য না পেয়ে ঘৃণা, ধর্ম, জাতপাত এগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে৷ এটা ভারতের মতো দেশের জন্য দুঃখজনক৷ আর সেই কারণেই এবার ভোটারের উপস্থিতি কম৷ কাশ্মীরের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার ডান্ডা ও ঘুস নীতি প্রয়োগ করছে৷ তাই সেখানে বিজেপির প্রার্থী দেয়া, না দেয়ায় কিছু এসে যায় না৷ ভারতে যারা নির্বাচন পরিচালনা করছেন, তারা তুলনামূলক নিরপেক্ষ ও স্বাধীন৷
নীতির তেমন পরিবর্তন হবে না: মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্য
মোদীনীতির প্রতি ভারতে সমর্থন কমছে৷ বিশেষ করে নাগরিকত্ব আইন এবং নির্বাচনের আগে ধর্মের যে ব্যবহার, তা নির্বাচনের পরিবেশকে খারাপ করেছে৷ ভোটাররা এই কারণে কম ভোট দিতে গেছেন৷ আর ওই অবস্থার প্রতি সমর্থন কমছে৷ নির্বাচন পুরো শেষ হলে বোঝা যাবে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়৷ তবে মনে হচ্ছে কংগ্রেস আবার ছাই থেকে উঠে দাঁড়াচ্ছে৷ তবে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে সেখানকার নীতির পরিবর্তন যে খুব বেশি হবে সেটা বলা যাচ্ছে না৷
ভারতের জনগণ প্রগতিশীলতার দিকে যেতে চাইছে: রুহিন হোসেন প্রিন্স, কমিউনিস্ট পার্টি
পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ভারতে যারা প্রগতিশীলতার জন্য লড়াই করেন ও যারা সংবিধান রক্ষা করতে চান, তাদের পক্ষে সমর্থন বাড়ছে৷ এতে আমরা খুশি, কারণ, আমরা ভারতের জনগণের সঙ্গে কাজ করতে চাই৷ মোদীকে তো আমরা জানি৷ তিনি আবারো ক্ষমতায় আসলে শুধু ভারত নয়, এই উপমহাদেশের জন্য ক্ষতি৷ আমাদের দেশের জন্যও ক্ষতি৷ আর কাশ্মীরে প্রার্থী দিলে বিজেপির লোকজন প্রতিরোধ ও প্রতিবাদের মুখে পড়তো৷ তাই প্রার্থী দেয়নি বলে মনে হয়েছে৷