নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
২৩ আগস্ট ২০১২পরমাণু সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দুর্বল করে রাখার সমালোচনা করে জাতীয় অডিটর জেনারেল বা সিএজি'র রিপোর্টে বলা হয়, অবিলম্বে সুরক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিলে ফুকুশিমা বা চের্নোবিলের মতো বিপর্যয় ঘটতে পারে৷
ভারতের চালু ২২টি পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব পরমাণু সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা সংক্ষেপে এইআরবি'র৷ কিন্তু সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়মবিধি কার্যকর করার বা নিয়মবিধি তৈরি করার ক্ষমতা দেয়া হয়নি তাদের৷ সুরক্ষা বিধি ভঙ্গ করলে বড়জোর ৫০০ টাকা জরিমানা করতে পারে৷ কলকাতার সাহা ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের বিজ্ঞানী ডয়চে ভেলের কাছে অনুরূপ দুশ্চিন্তার কথা বললেন৷
শুধু তাই নয়, এইআরবি'র হাতে কোনো আইনি ক্ষমতা নেই কেন্দ্রীয় সরকারে অধীনস্থ আর পাঁচটা সংস্থার মতো৷ সিএজি'র রিপোর্টে, এইআরবি'র বৈধ ক্ষমতা ও মর্যাদা বাড়িয়ে এক স্বাধীন সংস্থায় পরিণত করার সুপারিশ করা হয়৷ দেশের ক্রমবর্ধমান পরমাণু বিদ্যুতের চাহিদার প্রেক্ষিতে এটা অত্যন্ত জরুরি৷
সেটা করা না হলে পরমাণু নিরাপত্তা, তেজস্ক্রিয় সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়মবিধি সংশোধন বা জরিমানার পরিমাণ ধার্য করতে পারবে না এইআরবি৷ ১৬৮টি সুরক্ষা মাপকাঠির মধ্যে ২৭টির কোনো অস্তিত্ব নেই৷ উদাহরণ হিসেবে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, মুম্বাই-এর তারাপুর পরমাণু কেন্দ্রে যাবার রাস্তা এত ভিড়বহুল যে, কোনো বিপর্য়য় ঘটলে সেটা এক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে৷
পাশাপাশি নাগরিক সমাজ সরকারের পরমাণু বিদ্যুৎ নীতির নিন্দা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরমাণু কেন্দ্রগুলির কাজ অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানায়৷ বলা হয়, পরমাণু কেন্দ্র নির্মাণের আগে স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে৷ অভিযোগ করা হয়, গোপনীয়তার মোড়কে পরিবেশ নিয়মবিধি ব্যাপক লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ তাই এবিষয়ে স্বচ্ছতা চাই৷ পরমাণু বিদ্যুৎ শক্তি বিরোধী সক্রিয়বাদীদের দাবি, পরমাণু শক্তির বদলে দরকার বিকল্প ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ৷ তাদের মতে, পরমাণু প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করলে বিদেশি পরমাণু কোম্পানিগুলি লাভবান হবে৷
প্রতিবেদক: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ