ভারতের পরমাণু কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থার পর্যালোচনা
১ জুন ২০১১হালে জাপানের পরমাণু বিপর্যয় ভারতের মত বিশ্বের অন্যান্য পরমাণুশক্তিধর দেশগুলিকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এর প্রেক্ষিতে ভারতের পরমাণু স্থাপনাগুলির নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আরো কী কী ব্যবস্থা নেয়া দরকার, তা নিয়ে আজ পরমাণু সংস্থাগুলির কর্তাব্যক্তিদের এক বিশেষ বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং৷ শুধু তাই নয়, সুনামি ও ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও আলোচনা হয়৷
বৈঠকে আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় অতিরিক্ত যেসব ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়, তার মধ্যে আছে, বর্তমানে যে চারটি জাতীয় রেসপন্স ব্যাটেলিয়ান আছে তার সংখ্যা বাড়িয়ে ৬টি করা এবং তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ধরার জন্য বিশেষ যান সংগ্রহ ইত্যাদি৷ চারটি রেসপন্স ব্যাটেলিয়ানের একটি দিল্লির কাছে, একটি কোলকাতায়, একটি তামিলনাড়ুতে এবং একটি পুনেতে৷
রাসায়নিক, জীবাণু ও পরমাণু তেজস্ক্রিয়তার বিপদ সামাল দিতে আরো যে-সব ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয় তার মধ্যে আছে দশ লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ৩৫টি শহরের এক হাজার পুলিশ থানায় ডোসি-মিটার বসানো৷ডোসি-মিটার এক উচ্চ-প্রযুক্তির উপকরণ যা দিয়ে মাপা যায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা৷
উল্লেখ্য, গতকাল নতুনদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল পরমাণু কেন্দ্রগুলির উচ্চ প্রযুক্তির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জার্মানির সাহায্যের প্রস্তাব দেন৷ কারণ এক্ষেত্রে জার্মানি বিশ্বের অগ্রণী৷ ভবিষ্যতে পরমাণু বিদ্যুৎশক্তির ওপর নির্ভরতা ধীরে ধীরে কম করে পুনর্নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎশক্তির ওপর জোর দেবার আহ্বান জানান তিনি৷ উত্তরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দূষণ নির্গমন মাত্রা কম করতে পুনর্নবায়নযোগ্য জ্বলানির প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে বলেন, ভারতের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাত্র ৩% আসে পরমাণু কেন্দ্রগুলি থেকে৷ অথচ বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে৷ তাই ভারত ২০২০ সাল নাগাদ পরমাণু বিদ্যুতের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে ২০ হাজার মেগাওয়াট ৷
সরকারের পরমাণু বিদ্যুৎ কর্মসূচির বিরুদ্ধে ক্রমশই সোচ্চার হয়ে উঠছে দেশের জনমত৷ নতুন পরমাণু প্রকল্পগুলি বাতিল করার দাবি উঠছে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এবং বিপর্যয়রোধে ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক